Image description

পারিবারিক কলহের জেরে একমাত্র সন্তানকে দেখতে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ায় প্রাণ দিতে হলো মো. হানিফ নামের এক ব্যক্তিকে। গত ১৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার মাঝের ঘোনা গলাচিপা কাঁচা রাস্তার মোড়ে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। গতকাল বুধবার (১৮ জুন) পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমের সামনে আনে। এ ঘটনায় হানিফের স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক এবং এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন- হানিফের শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা, শ্যালক আরিফ মোল্লা, আরিফের বন্ধু দেলোয়ার হোসেন বাবু, হানিফের স্ত্রী নুরজাহান আক্তার আঁখি, শাশুড়ি রহিমা বেগম

পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে হানিফ ও আঁখির বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের কারণে আঁখি বাবার বাড়িতে চলে যান এবং দম্পতি আলাদা থাকতেন। তবে হানিফ প্রায়শই তাদের একমাত্র সন্তানকে দেখতে শ্বশুরবাড়ি যেতেন। এই বিষয়টি শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারতেন না, যার জেরে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। এরপরও হানিফ মেয়ের সঙ্গে দেখা করা বন্ধ করেননি।

হানিফের বাবা জামাল মিয়ার অভিযোগ অনুযায়ী, গত ১৫ জুন রাত তিনটার দিকে মেয়ের অসুস্থতার কথা বলে শ্বশুর খোরশেদ হানিফকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে গেলে শ্বশুরসহ অন্য আসামিরা মিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে। হানিফ প্রাণ বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধাওয়া করে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই কাজী আবিদ হোসেনের ভাষ্য কিছুটা ভিন্ন। তিনি জানান, ঘটনার দিন হানিফ নিজ থেকেই শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। তার শ্বশুরবাড়ি একটি টিলা এলাকায়। ভোররাতে সেখানে গিয়ে ডাকাডাকি করায় শ্বশুর খোরশেদ ছুরি নিয়ে বের হন। এ সময় হানিফ মোবাইলে ভিডিও করছিলেন। একপর্যায়ে রেগে গিয়ে হানিফ শ্বশুরকে ধাক্কা দেন। তখন খোরশেদ ছুরি দিয়ে হানিফকে ছুরিকাঘাত করেন। হানিফ দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে খোরশেদ, আরিফ এবং বাবু তাকে ধাওয়া করে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হানিফের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে খোরশেদ, আরিফ এবং বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুটি ছুরিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহাল প্রতিবেদনে হানিফের শরীরে ১৭টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।