Image description

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন মির্জাপুর ইউনিয়নের বৌলাশীর গ্রামের সৌরভ কান্তি দাশ এবং চা বাগান এলাকার গোপাল লোহা। সরকারি এ প্রকল্পের আওতায় চা শ্রমিকদের এককালীন ৬ হাজার টাকা প্রদান করার কথা থাকলেও তারা ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মির্জাপুর ইউনিয়নের সামাজিক সেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২৪ জন চা শ্রমিকের টাকা ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং পদ্ধতিতে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সৌরভ কান্তি দাশ তাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে টাকা না দিয়ে ওই ২৪ জনের বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা গোপাল লোহাকে হস্তান্তর করেন। গোপাল লোহা তাদের মধ্যে জনপ্রতি ৪ হাজার টাকা করে বিতরণ করেন, বাকিটা আত্মসাৎ হয়।

ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পেয়ে প্রশাসনের নজরে আসে। এরপর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের মির্জাপুর ইউনিয়ন সমাজকর্মী মো. বশির মিয়া বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলা তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সোয়েব হোসেন চৌধুরী জানান, উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে ১০ হাজারের বেশি শ্রমিককে বছর শেষে ৬ হাজার টাকা করে এককালীন প্রদান করা হয়। এসব টাকা ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে শ্রমিকদের হাতে সরাসরি পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে মির্জাপুর ইউনিয়নে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা দেওয়ার সময় এই দুর্নীতি ঘটেছে।
শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, চা শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে এবং এ নিয়ে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, ২৪ জন শ্রমিকের মধ্যে ইতিমধ্যে ১৭ জনের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকিদের জন্যও ফেরত প্রক্রিয়া চলছে। তারা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে যাতে প্রকৃত উপকারভোগীরা তাদের পাওনা টাকা পান।

এই ঘটনাটি চা শ্রমিকদের জীবনের উন্নয়ন ও সরকারি প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে এনে দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা বিভাগ এ ধরনের অনিয়ম রোধে নিরলস কাজ করছে।

মামলার গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে অন্যায় কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে প্রশাসনের সদিচ্ছা দেখানো হয়েছে। এর ফলে চা শ্রমিক সমাজে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।