প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ৫ দিন অনশন: অত:পর বিয়ে সম্পন্ন

পিরোজপুরের নাজিরপুরে ৪ নং দীর্ঘা ইউনিয়নের মধ্য লেবুঝিলবুনিয়া গ্রামের মো. জাকির হোসেন বিজয় (৩১) নামের এক যুবকের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ৫ দিন অনশনের পর পছন্দের মানুষটির সঙ্গেই বিয়ে হয়েছে রাদিয়া শাহ (২২) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর। শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে দুই পরিবারের সমঝোতায় ৪ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে সম্পন্ন হয়। ফলে রাদিয়া শাহ'র সকল ভাবনার সমাপ্তি হলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মো. জাকির হোসেন বিজয় ঢাকায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী (এলডিএ) চাকুরির সুবাধে তার গ্রামের এস এম আজিমুল্লাহর মেয়ে রাদিয়া শাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ঢাকা গেলে তার (জাকির) এর সঙ্গে পরিচয় হয়। পরিচয় সূত্রে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। তিন বছরের প্রেম করেন তারা। এরপর গত ৮ জুন একই গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে প্রেমিক মো. জাকির হোসেন বিজয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবীতে অনশনে বসেন প্রেমিকা রাদিয়া শাহ। এরপর স্থানীয়রা তিনবার শালিসি বৈঠকের পরেও যখন কোনো সমাধানে যেতে পারেননি। তখন থানার দ্বারস্থ হন রাদিয়া পরিবার নাজিরপুর থানা পুলিশ বিজ্ঞ আদালত এবং থানায় আইনের আশ্রয় নিতে বলেন, এসময় উপস্থিত স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি বর্গের মধ্যস্থাতায় আজ শুক্রবার (১৩ জুন) ছেলে-মেয়ের পরিবারের ৪ লক্ষ টাকা কাবিনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
এ বিষয়ে রাদিয়া শাহ জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় মো. জাকির হোসেন বিজয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেম তারপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বেশ কয়েক বার শারীরিক মেলামেশা করেন জাকির আমার সঙ্গে। আমি জানতে পারি তার অনত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে। এটা জানার পর আমি জাকিরকে বিয়ের জন্য বললে সে আমাকে বিয়ে করতে অপরাগত হন। এরপর আমি গত ৫ দিন ধরে বিয়ের দাবিতে জাকিরের বাড়িতে অনশন করি অবশেষে থানায় অভিযোগ দিতে এসেছি। থানায় আসার পরে জাকিরের পরিবার স্থানীয়দের সহযোগিতার মাধ্যমে আমার বিয়ে হয়েছে আমি খুশি। আমি আমার পছন্দের মানুষটিকে পেয়েছি কষ্ট হলেও।
স্থানীয়রা আরো জানান, বিয়ের দাবিতে যখন প্রেমিকা রাদিয়া শাহ জাকিরের বাড়িতে আসেন তখন জাকির পালিয়ে যান। গত ৫ দিন যাবৎ মেয়েটিকে দেখতে ওই বাড়িতে শত শত কৌতুহলী উৎসুক জনতা ভীড় করেন। অনেকেই নিজ বাড়ী থেকে খাবার নিয়ে এসে মেয়েটিকে খেতে দিয়েছে। একই সঙ্গে মো. জাকির হোসেন বিজয় এর সঙ্গে বিয়ে না হলে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সময় নিজের শরীরে নিজেই আঘাত করেন।
সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশায় অনশনে থাকা মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন নাজিরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ নাজিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি কেএম সাঈদের নেতৃত্বে নাজিরপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা।
অবশেষে শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে দুই পরিবারের সমঝোতায় ৪ লাখ টাকার কাবিনে প্রেমিক জাকিরের এর সাথেই প্রেমিকা রাদিয়া শাহর বিয়ে সম্পন্ন হয়। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি করেন সদর ইউনিয়নের এর কাজী।
জাকিরের চাচা নজরুল ইসলাম বলেন, বিয়েটা হয়ে ভালো লাগছে। আমাদের বাড়িতে চারদিন ছিলো এরপর আজ ৫ দিনের মাথায় বিয়েটা নাজিরপুর উপজেলা সদরে বসে সম্পন্ন হয়েছে। তাতে আমি ও আমার পরিবারের সবাই খুশি। এব্যাপারে জাকির কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হনিন।
Comments