
গ্রামীণ বাংলার প্রাণের খেলা হা-ডু-ডু যেন হারিয়ে যেতে বসেছে আধুনিকতার স্রোতে। অথচ এ খেলাই একসময় গ্রামবাংলার মাঠে-ময়দানে গর্জে উঠত দুরন্ত কিশোর-তরুণদের কলরবে। সেই হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে আয়োজন করা হয় হা-ডু-ডু প্রতিযোগিতার।
রবিবার (০৮ জুন) বিকেলে উপজেলার বাগবেড় বালু মাঠে দক্ষিণবাগ যুব সমাজের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই জমজমাট খেলা। এতে অংশ নেয় দুটি স্থানীয় দল-মেঘ মল্লা ও দলছুট। দর্শকভর্তি মাঠে দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মেঘ মল্লা দল ১-০ পয়েন্টে দলছুটকে পরাজিত করে বিজয়ের মুকুট অর্জন করে।
খেলা শেষে বিজয়ী দলের খেলোয়াড়দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সমাজসেবক মঞ্জুরুল আহসান, এডভোকেট কবির হোসেন, মো. লুৎফর রহমান ও শিক্ষক রবিউল ইসলাম।
সমাজসেবক মঞ্জুরুল আহসান বলেন, শহরের কোলাহলে হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলোর মধ্যে হা-ডু-ডু অন্যতম। আমাদের তরুণদের মাদক ও অপসংস্কৃতি থেকে দূরে রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই।”
এডভোকেট কবির হোসেন বলেন, “আমাদের জাতীয় খেলা হলেও কাবাডির প্রতি এখনকার প্রজন্মের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। নিয়মিত এ ধরনের আয়োজন করলে সেই আগ্রহ আবার ফিরবে।”
খেলা দেখতে আসা দর্শকদের মধ্যে ছিলো আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, “বহু বছর পর এমন খেলা দেখলাম। ঈদের আনন্দ যেন নতুন করে ফিরে এল।”
বয়োজ্যেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ বলেন, এই খেলা একসময় আমাদের শৈশবের সঙ্গী ছিল। আজ আবার তা দেখে চোখ ভিজে এলো।”
৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাজমিন জাহান রাফা বলেন, আমি এমন খেলা কখনও দেখিনি এই প্রথম বার দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এই আয়োজন আমাদের মধ্যে খেলাধুলার আগ্রহ বাড়াবে। আমরা চাই, প্রতি বছর এ ধরনের টুর্নামেন্ট হোক।”
প্রধান পৃষ্ঠপোষক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, আজকের এই খেলায় এলাকার সবাই এক হয়ে গেছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, সবাই আনন্দে মেতে উঠেছে। এটাই তো গ্রামের আসল সৌন্দর্য।
খেলার মাঠজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। করতালি, উৎসাহ, আর চিৎকারে মুখর হয়ে ওঠে পুরো মাঠ। অনেকেই জানান, ঈদের দিনগুলোতে এমন আয়োজন নিয়মিত হলে এলাকার যুবসমাজ গড়ে উঠবে ইতিবাচক চেতনায়।
Comments