লক্ষীপুরে জামায়াত নেতার মৃত্যু নিয়ে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের বিপরীত বক্তব্য

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় জামায়াতের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের হামলায় নিহত হয়েছেন ওই নেতা। তবে পুলিশ বলছে, হামলা নয় অন্য কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
বাংগাখাঁ ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রাজিবপুর এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করছে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।
নিহত ব্যক্তির নাম কাউছার আহমেদ (৬০)। কাউছার আহমেদ রাজিবপুর এলাকার মৃত মমিন উল্যাহর ছেলে। তিনি স্থানীয় জামায়াতের একটি ইউনিটের সভাপতি বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানায়, রাজিবপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব বিরোধের জেরে জামায়াত নেতা কাউছার আহমেদ ও রিয়াজ হোসেন, বাবুল এবং সোহাগদের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় কাউছার আহমেদসহ পরিবারের তিনজন আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসা শেষে কাউছার আহমেদসহ অন্যরা বাড়িতে চলে যান। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে বাড়িতে কাউছার আহমেদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। এ ঘটনার জন্য প্রতিবেশী রিয়াজ হোসেন, বাবুল হোসেন ও সোহাগসহ অন্যদের দায়ী করেন নিহতের স্বজনেরা। তাদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে কাউছার আহমেদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।
এদিকে স্থানীয় জামায়াত নেতা জামাল উদ্দিন বলেন, নিহত ব্যক্তি জামায়াতের একটি ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। মাদকাসক্ত যুবদলের কর্মী রিয়াজ হোসেন, বাবুল ও সোহাগের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালিয়ে কাউছারকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, কাউছার আহমেদ জামায়াতের একটি ইউনিটের সভাপতি ছিলেন। তাকে (কাউছার) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
তবে জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিম লিটন বলেন, নিহত ব্যক্তি ও তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নিজেদের কর্মী দাবি করে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চায় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। তবে কাউছার আহমদ মারামারিতে নয়, অসুস্থ হয়ে মারা যান। এ ঘটনার সঙ্গে যুবদলের কোনো নেতা-কর্মী জড়িত নয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে হামলা না, অন্য কোনো কারণে কাউছার আহমেদের মৃত্যু হয়েছে, সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments