Image description

গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়নপুর নতুন বাজার এলাকায় জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানায় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ ও এপিসি কার ভাংচুরের ঘটনায় ২৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (০৩ জুন) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, শ্রীপুরের নয়নপুরে শ্রমিক আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের শ্রীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেয়া, ভাংচুরের অভিযোগে মামলা হবে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, আটককৃতদের ১৯ জনকে ইতিমধ্যে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকীদেরও থানায় হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ। শিল্প পুলিশের দেয়া অভিযোগে প্রেক্ষিত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত সাড়ে ৭টার কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ওই কারখানার শ্রমিক মো. জাকির হোসেন (৩০) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে ক্ষুব্দ শ্রমিকরা মঙ্গলবার সকালে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের এপিসি গাড়ি। পুলিশের সাথে ধাওয়া- পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনায় পরিস্থিতি নিতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। এসময় শ্রমিকদের সাথে সংঘর্ষে ১১জন পুলিশ সদস্য ও অর্ধশত কারখানার শ্রমিক আহত হন।

কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, পুলিশ পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের উপর হামলা করে।

অপরদিকে পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি ও শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় এই হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে সেখানে কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে।

কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে ওই কারখানার শ্রমিক নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে মো. জাকির হোসেন (৩০) নিহত হন।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। লাফিয়ে পড়ার পর তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত নয়টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কারখানার এজিএম জুবায়ের বাসার বলেন, ওই শ্রমিক ছুটি চাইতে যাননি। বরং তিনি জানতে পেরেছেন পারিবারিক কলহের কারণে হতাশায় ভুগছিলেন। হতাশা থেকেই তিনি লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মোঃ আব্দুল লতিফ বলেন, শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাংচুর করেন। পরে তাদের আমরা ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।