আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রকল্প থেকে হবিগঞ্জ অংশ বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন

হবিগঞ্জ-লাখাই-নাসিরনগর-সড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের হবিগঞ্জ অংশ বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ৮টি ইউনিয়নের হাজারো নারী পুরুষ। মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা ১১ টায় হবিগঞ্জ শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ২টি ও লাখাই উপজেলার ৬টি ইউনিয়নবাসী এই মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রায় ৬৬১.৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। কিন্ত নাসিরনগর থেকে সড়াইল পর্যন্ত সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হলেও হবিগঞ্জ অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
বক্তারা বলেন, এই সড়কটি উন্নয়ন হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সাথে সিলেট বিভাগের দূরত্ব কমবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। যাতায়াত খরচও কমবে। এ সড়কের পাশে বিভিন্ন শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।
হবিগঞ্জ-লাখাই-নাসিরনগর-সড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কটি অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। এ সড়কটি হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও কিশোরগঞ্জের কয়েকটি উপজেলার সাথে রাজধানী ঢাকার যাতায়াত সহজ করেছে। প্রতিদিন অর্ধলক্ষাধিক যানবাহন ও কয়েক লাখ মানুষ দৈনিক এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। ৪ জেলার মধ্যে আর্থ-সামাজিক, কৃষি ও শিল্প সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক উন্নয়ন হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সঙ্গে বিকল্প ও কার্যকর সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনীতিকে বেগবান করবে। পণ্য পরিবহন সহজ হবে, স্থানীয় জনগণের ভ্রমণ ব্যয় ও সময় সাশ্রয় হবে এবং সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু সড়কটির নাসিরনগর-সড়াইল অংশে কাজ শুরু হলেও হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আমরা এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা জানাই। বার বার হবিগঞ্জবাসীর সাথে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। ক’দিন পর পরই একেকটি প্রকল্প বাতিল করা হচ্ছে। এটি কোন অদৃশ্য ষড়যন্ত্র বলে আমারা মনে করছি। তবে যেকোন ষড়যন্ত্র আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবো। যদি প্রকল্পের হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেয়া হয় তবে তীব্র আন্দোন গড়ে তুলা হবে। প্রয়োজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে ঢাকার সাথে সিলেট বিভাগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইসলাম তরফদার তনু ও হাজী এনামুল হক, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা রফিক, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান কাজল, সিনিয়র সহ সভাপতি আজিম উদ্দিন, পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান বাচ্চু, জালাল আহমেদ, সফিকুর রহমান সিতু, জেলা জাসাসের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা লাভলী সুলতানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ তালুকদার আব্দাল, লাখাই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ ফরিদ মিয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম গোলাপ, লোকড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ইলিয়াছ আহমেদ, রিচি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী শামছু মিয়া, লাখাই সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোস্তাফা কামাল খসরু, মোড়াকরি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক, মুড়িয়াউক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান চৌধুরী, বামৈ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পারভেজ আহমেদ জুলহাস, করাব ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মারুফ আহমেদ বাবুল, বুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মোক্তাদির তালুকদার প্রমূখ৷
Comments