
চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাসহ পাঁচ মামলায় বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুর একটার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে, অসুস্থতাজনিত কারণ উল্লেখ করে চিকিৎসার জন্য চিন্ময়ের জামিন আবেদন করেন তার আইনজীবী অপূর্ব কুমার ঘোষ।
আইনজীবী অপূর্ব কুমার বলেন, ‘চিন্ময় কৃষ্ণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছাড়াও আইনজীবী আলিফ হত্যা, পুলিশের ওপর হামলার আরো পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে। ঘটনার সময় তিনি জেলে ছিলেন, তাই ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন না।’
‘আজ আদালতে ওই পাঁচ মামলায় জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে সবগুলো মামলাতেই তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। বর্তমানে তিনি লিভার সিরোসিসসহ জটিল রোগে আক্রান্ত। এ অবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিন প্রয়োজন ছিল।’ বলেন অপূর্ব।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েকদিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। একই বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের আদালত। সেদিনই চিন্ময় দাসের আইনজীবীরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে আবার জামিন আবেদন করেছিলেন। তার জামিন ঘিরে সংঘর্ষে জড়ান চিন্ময়ের ভক্তরা। তবে সংঘর্ষের সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে একজন আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
পরবর্তীতে আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ওই পাঁচটি মামলাতেই পরবর্তীতে চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। কিন্তু জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করলে তার মুক্তি আটকে যায়।
Comments