Image description

টানা ভারী বর্ষণের কারণে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতা ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার। গতকাল রবিবার (১ জুন) রাতে বৃষ্টি কিছুটা কমে এলে পানি নামতে শুরু করেছিল। তবে সোমবার (২ জুন) সকাল ১১টার পর থেকে আবারও টানা বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি ঘটে। নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ১৫০টি পরিবার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য দুপুরের খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি, বন্যার্তদের মাঝে জরুরি ত্রাণসামগ্রী, শুকনো খাবার ও ওষুধ বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবীরাও দুর্গত এলাকাগুলোতে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা দুর্গত মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছেন।

পূর্ব লাইল্যাঘোনা এলাকার বাসিন্দা মো. নুর সালাম জানান, বাঘাইছড়িতে বন্যা নতুন কিছু নয়। তবে দুঃখজনক হলো, আমাদের এলাকায় একটি আশ্রয়কেন্দ্রও নেই। এখানে যদি একটি স্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র থাকত, তাহলে অনেক মানুষ উপকৃত হতো।

একই এলাকার বাসিন্দা সাবিনা আক্তার জানান, আমাদের ঘরের ভেতরে কোমর পানি। চুলায় আগুন দিতে পারছি না। আমার ছোট ছেলেটা জ্বরে ভুগছে। আশ্রয়কেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় সেখানে যেতে পারছি না। খুব কষ্টে আছি।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার জানান, বর্তমানে বৃষ্টি কম হলেও পানি এখনও কমেনি। এখনও পর্যন্ত পানিবন্দি হয়ে আছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার। বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রীত আছে ১৫০টি পরিবার। এছাড়া, বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানিতে রাস্তা ডুবে গেছে, ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অনেকের ফসলের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে, যা কৃষকদের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।