Image description

প্রতিবেশীর সঙ্গে নির্মাণ সামগ্রী ভাড়ার দরদাম নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের ব্যবহৃত ছেঁড়া শার্ট ও মোটরসাইকেল রাস্তায় ফেলে পালিয়ে গিয়ে গুমের নাটক সাজিয়েছিলেন এক যুবক। টানা ১৭ দিন কক্সবাজারে আত্মগোপনে থাকার পর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের সাইঞ্চারপাড় গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

অভিযুক্ত যুবকের নাম স্বপন মোল্লা (৩২)। তিনি ওই গ্রামের জসিম মোল্লার ছেলে।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার মূলবাড়ি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে নির্মাণসামগ্রী (সেন্ডারিংয়ের বাঁশ-কাঠ) ভাড়ার দরদাম নিয়ে স্বপন মোল্লার তর্কবিতর্ক হয়। এর জেরে গত ১০ মে বিকেলে সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী বাবুকে মারধর করেন স্বপন। এরপর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার সিদ্ধান্ত হয়।

তবে স্থানীয় মাতব্বরদের সিদ্ধান্ত অমান্য করে কাউকে কিছু না জানিয়ে 'ঘটনা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে' বাড়ি থেকে পালিয়ে যান স্বপন। গত ১০ মে রাত ১২টার দিকে বলারদিয়ার মাধুর মোড়ের কাছে রাস্তা থেকে তার ছেঁড়া শার্ট ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ। আত্মগোপনে থাকাকালীন সময়ে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন।

সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ আলী বাবু অভিযোগ করেন, "আমাদেরকে ফাঁসাতে স্বপন পরিকল্পিতভাবে পালিয়ে গিয়ে গুম নাটক সাজায়। বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে সে 'প্রাণনাশের হুমকির কথা উল্লেখ করে তার স্ত্রীর কাছে কম্পিউটারে কম্পোজ করা একটি চিঠি রেখে যায়। ওই রাতেই চিঠির সূত্র ধরে পুলিশ আমার ভাই মোহাইমিনুল ইসলাম সাবুকে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ প্রমাণিত না হওয়ায় পরদিন দুপুরে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।"

গত ২২ মে স্বপন তার মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে ফোন করে জানান, তিনি বিপদে আছেন এবং দ্রুত ২ লাখ টাকা পাঠাতে বলেন। বিষয়টি পরিবার থানায় জানালে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায় তার অবস্থান শনাক্ত করে। পরে উখিয়া থানার সহায়তায় সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে উখিয়া এলাকার একটি মসজিদ থেকে তাকে উদ্ধার করে।

সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদুল হাসান জানান, "প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়ার ঘটনা অন্যদিকে মোড় দিতে স্বপন গুম নাটক সাজিয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের আত্মগোপনে থাকার কথা স্বীকার করেছে। ১৬ দিন পর তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন চালু করায় তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত ও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।"