বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌর এলাকায় টানা মৌসুমি ভারি বর্ষণ ও নদীর জোয়ারের প্রভাবে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বহু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখতে মোড়েলগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হাবিবুল্লাহ পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বদরুদ্দোজা, উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাবির। পরিদর্শন শেষে ইউএনও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌরসভার সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিতে শহরের বাজার এলাকা, হাসপাতাল রোড, কলেজপাড়া, কৃষি ব্যাংক রোড, বাজার লঞ্চঘাট ও নতুন কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর ফলে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছে। পথচারী, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও রোগীবাহী যানবাহনের চালকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পৌর শহরে দীর্ঘদিন ধরে কোনো টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়নি। পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। এই কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমেই পৌরবাসীকে একই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

পরিদর্শনের সময় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিনের সংস্কারের অভাবে রাস্তাঘাট জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। নদীর পানি ঢুকে অনেক দোকানে পানি প্রবেশ করায় তাদের পণ্যদ্রব্যের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত এবং রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছাতেও চরম অসুবিধা হচ্ছে।

এদিকে, বাগেরহাট -৪ আসনের বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা কাজী খায়রুজ্জামান শিপন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “গত ১৭ বছরে মোরেলগঞ্জবাসী উন্নয়নের শুধু আশ্বাসই পেয়েছে, কিন্তু টেকসই বেড়িবাঁধ বা আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।”

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি বাজার এলাকায় নদীর পানি প্রবেশের পথগুলো দ্রুত বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সামনে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে জলাবদ্ধতা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে উপজেলা প্রশাসন।