ইন্দুরকানীতে আশ্রয় কেন্দ্রের অভাবে ঝুঁকিতে লক্ষাধিক মানুষ

পিরোজপুরের উপকূলীয় উপজেলা ইন্দুরকানীতে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্রের অভাবে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিন দিকে নদীবেষ্টিত এই উপজেলার বাসিন্দাদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় ঝড় এলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তারা। নদীর কাছে আশ্রয় নেওয়ার মতো বড় ভবন বা আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় প্রায়শই দুর্ঘটনার শিকার হন স্থানীয়রা।
উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয় দেওয়ার জন্য স্কুল কাম সেল্টারসহ ২৬টি কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও, দিনের বেলায় সেখানে বিদ্যালয়ের ক্লাস চলায় এর চাবি শিক্ষকদের কাছে থাকে। ফলে দুর্যোগকালে দ্রুত আশ্রয় নেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর পানি সামান্য বৃদ্ধি পেলেই চরাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন কাটান। উপজেলার টগরা, ইন্দুরকানী, বালিপাড়া, কালাইয়া, কলারণ, সাউদখালী, খোলপটুয়া, চাড়াখালী ও চরলেশ্বরের মতো বেশ কিছু গ্রামে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় স্থানীয়রা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এর মধ্যে নদী পার্শ্ববর্তী হওয়ায় কালাইয়া গ্রামটি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেখানে কোনো আশ্রয় কেন্দ্র নেই।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডরের আঘাতে এই উপজেলায় প্রায় শতাধিক লোক প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এরপরও ইন্দুরকানীতে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র নির্মিত না হওয়ায় প্রতি বছর ঝড়ের মৌসুমে এখানকার মানুষ চরম উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটান।
ইন্দুরকানী উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মিলন তালুকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এই উপজেলার ঘনবসতির কথা বিবেচনা করে প্রতিটি গ্রামে কমপক্ষে একটি করে আশ্রয় কেন্দ্র থাকা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান বিন মুহাম্মাদ আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়কে ঘিরে উপজেলায় প্রস্তুতিমূলক সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার স্কুল কাম-সাইক্লোন সেল্টারগুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Comments