Image description

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরে চলতি মৌসুমের প্রধান আবাদ বোরো (ইরি) ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে সোনালি হাসি ফুটেছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন পাকা ধানে ছেয়ে গেছে প্রকৃতি। মাঠে চলছে ধান কাটার মহোৎসব। বোরো ধান রোপণের পর থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এই ভালো ফলন হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও পৌর সদরে ২২ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে এ মৌসুমে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের ধারণা করছে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাবে কৃষকরা। এবারের মৌসুমে কৃষকেরা ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২, ব্রি ধান ১০০, ব্রি ধান ১০১, ব্রি ধান ১০২, হাইব্রিডসহ আরো কয়েক জাতের বোরো ধানের আবাদ করেছে। ১৩টি ইউনিয়নসহ পৌর সদরে ধান কাটছে কৃষকেরা। ভোর থেকে রাত অবধি খেতের ফসল গোলায় তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। এরই মধ্যে প্রায় ৫০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সরকারিভাবে এক হাজার ৪৬ মেট্রিক টন বোরো ধান এবং তিন হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন বোরো ধানের চাউল ক্রয় সংগ্রহ করা হবে। প্রতি কেজি ধান ৩৬ টাকা ও চাউল প্রতি কেজি ৪৯ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়েছে। 

উপজেলার কৃষক মোহাম্মদ আলী, করিম মিয়া, বাশার খাঁ, আসমত মোল্লা, কুদ্দুস আলীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও পরামর্শে চলতি বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলনের হয়েছে। ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন এবং অন্যান্য জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। 

এ দিকে কৃষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে শ্রীফলতলা গ্রামের ৩ বিঘা জমিতে ব্রি ধান ১০২ আবাদ করে বিঘায় ৩২ মন ধানের ফলন পেয়েছেন। 

অপরদিকে রহিম মন্ডল, ইয়াছিন আলী, বক্কার শেখসহ কয়েকজন কৃষকের অভিযোগ, জমিতে কম্বাইন রাইস হার্ভেস্টার মেশিন নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় ৭০০-৮০০ টাকা দিন মজুরিতে শ্রমিক নিয়ে জমিতে ধান কেটেছি। এবার কোনো সরকারিভাবে উপজেলা থেকে সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। প্রতিবারের মত যদি এবারও পাওয়া যেতো তাহলে বোরো চাষে আরও লাভবান হওয়া যেত। 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ জানান, চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে উফশী জাতের বীজ ও সার না পাওয়ায় কৃষকেরা প্রণোদনা পাইনি। তবে কিছু কৃষককে হাইব্রিড ধানের বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

তিনি জানান, ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা মাঠ পর্যায়ে নিয়মিতভাবে প্রান্তিক কৃষকদের বোরো ধান আবাদে পরামর্শ ও নানা ভাবে সহযোগিতা করেছে কৃষি বিভাগ। এ বছর প্রতি বিঘায় ২৭ থেকে ২৮ মন ধান ফলন পাওয়া যাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে ধান ৮০ ভাগ পেকে গেলেই ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।