Image description

আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা-জীবননগর আঞ্চলিক সড়কে অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির তৎপরতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে প্রতি বৃহস্পতিবার শিয়ালমারী পশুহাটের দিন এবং সোমবার ডুগডুগি হাটের দিন এই চক্রগুলো বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। মূলত গরু ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে তাদের সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে এই অসাধু চক্র।

স্থানীয়রা জানান, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বিভিন্ন ছদ্মবেশে বাস বা অন্যান্য যানবাহনে চলাচল করে। তারা চেতনানাশক ব্যবহার করে গরু ব্যবসায়ীদের অজ্ঞান করে পকেট বা লুঙ্গি কেটে টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর বাসের হেলপার অজ্ঞান অবস্থায় ভুক্তভোগীকে পশুহাটের কোনো এক স্থানে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। পশুহাটে থাকা লোকজন অচেতন অবস্থায় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করে। জ্ঞান ফিরলে ভুক্তভোগী বুঝতে পারেন তার সর্বস্ব খোয়া গেছে।

জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামের চমোন আলী নামে এক ভুক্তভোগী জানান, গত বৃহস্পতিবার  চুয়াডাঙ্গা থেকে ডাক্তার দেখিয়ে শিয়ালমারী পশুহাটে গরু কিনতে যাচ্ছিলেন। আলী দর্শনাতে বাসের মধ্যে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে তিনি লক্ষাধিক টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। যানবাহনের বাইরেও পশুহাটের মধ্যে পেয়ারা, শসা, পান, আমড়া, শরবত ও অন্যান্য খাবারের মধ্যে চেতনানাশক মিশিয়ে গরু ব্যবসায়ীদের অজ্ঞান করে টাকা লুটের ঘটনা ঘটছে। কোরবানির ঈদ আসলেই এমন ঘটনা শিয়ালমারী ও ডুগডুগি পশুহাটের দিন প্রায়ই ঘটে, গত বছরও এর ব্যতিক্রম ছিল না।

তবে স্বস্তির বিষয় আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা সুষ্ঠুভাবে উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা ইতোমধ্যে পশু হাটের ইজারাদার, খামারি ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি প্রতিরোধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে: হাটের মধ্যে খাবারের হোটেলে হাট মালিকের ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সিসিটিভি স্থাপন, অজ্ঞান ও মলম পার্টি সম্পর্কে মাইকিং করা, এবং যত্রতত্র ভ্রাম্যমাণ হোটেল না বসানো।

জীবননগর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন,  অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টি প্রতিরোধে যাত্রীবাহী বাসে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। তিনি যানবাহনে চলাচলের ক্ষেত্রে যাত্রীদের সাবধানতা ও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিচ্ছেন এবং অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির সদস্যদের ধরতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।