
চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ার অজুহাতে দিনাজপুরের হিলি বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। হঠাৎ এ দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। সরবরাহ এমন থাকলে দাম কমার সম্ভাবনা নেই। তবে ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে দাম কমতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বুধবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের প্রতিটি দোকানে দেশি পেঁয়াজের ভালো সরবরাহ দেখা গেছে। এরপরও দাম বেশি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ প্রকারভেদে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বুধবার ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা নাজমা বেগম বলেন, ‘গত রবিবারও পেঁয়াজ কিনলাম ৩০ টাকায়। বুধবার কিনতে এসে দেখি ভালোটা ৫৫ আর একটু নিম্নমানেরটার কেজি ৫০ টাকা হয়ে গেছে। আমরা গরিব মানুষ। এতো দাম দিয়ে কেনার সামর্থ্য থাকে না। দাম ৩০-৩৫ টাকা থাকলে আমাদের অনেক উপকার হয়।’
কেন কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে জানতে চাইলে হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। গত কয়েক মাস ধরে দেশি পেঁয়াজ দিয়ে ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো হচ্ছিল। গত সপ্তাহে দাম ছিল ৩০-৩৫ টাকা। চলতি সপ্তাহে বেড়ে ৫০-৫৫ টাকা হয়েছে। এর মূল কারণ সরবরাহ কম। যত দিন যাচ্ছে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। ভারত থেকে আমদানি শুরু হলে দাম স্বাভাবিক অবস্থায় আসবে। এ ছাড়া নয়।’
আরেক পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, ‘মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। এতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। মোকামে বিক্রির জন্য কৃষকরা আগে প্রতিদিন যে পরিমাণ আনতেন, তাতে পাঁচ ট্রাক হতো। এখন আসছে দুই ট্রাকের মতো। আগে পাইকারি মোকামে প্রতি মণ ১২শ থেকে ১৪শ টাকা ছিল। সেটি এখন বেড়ে ১৮শ থেকে দুই হাজার টাকা হয়েছে। বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হয়। তবে এখন দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি যদি ভারত থেকে আমদানি শুরু হয় তাহলে দাম কমবে। আমদানি শুরু না হলে আরও বাড়বে। কারণ সামনে কোরবানির ঈদ। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে। তাই আমদানি শুরু করতে হবে।’
বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর দিনাজপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত হাট-বাজারের দোকানগুলোতে অভিযান চালানো হয়। দোকানিরা কত দামে পণ্য কিনে কত দামে বিক্রি করছেন, সেটি মনিটরিং করা হয়। কারও বিরুদ্ধে অহেতুক কোনও কারণ ছাড়াই পণ্যের দাম বাড়ানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা করা হয়। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।’
Comments