Image description

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দিনমজুর আরমান আলীর (৪০) দুইটি গরু ও একটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। আগুনে ঝলসে গেছে আরো একটি গাভী গরুর শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ। এছাড়াও সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে তার একটি গোয়ালঘর।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত আনুমানিক একটার দিকে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের জোতভালুকা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরমান ওই গ্রামের মৃত আইজদ্দিন মন্ডলের দিনমজুর ছেলে। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র রমজানের কারনে তারাবির নামাজ পড়ে সবাই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিল। হঠাৎ রাত একটায় আগুনের প্রকট শব্দ ও বিশাল আলোয় ঘুম ভেঙে যায় আরমানের। পরে তার চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এরপর সবাই মিলে পানি ঢেলে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে আরমানের গোয়ালঘর, গোয়ালে থাকা দুইটি গরু ও একটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। আরো একটি গাভী গরুর শরীর প্রায় ৮০ ভাগ আগুনে ঝলসে গেছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, একটি গর্ভবতি অসুস্থ গরু মশারির ভিতরে রাখা হয়েছে। গরুটির ৮০ ভাগ শরীর, চোখ, মুখ ও কান পুড়ে গেছে। গোয়ালঘর সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গেছে। পোড়া গোয়ালঘরের ভিতরে মরা একটি বকনা গরু ও একটি ছাগল রয়েছে। পাশেই পড়ে আছে আরো একটি মরা বকনা গরু। আকাশে বাতাসে পোড়া গন্ধ। আগুনে পোড়া বাড়িতে উৎসুক জনতা ভিড় করেছে। শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েছে দিনমজুর আরমান ও তার স্ত্রী নাছরিন খাতুন।

এ সময় কান্না জড়িত কণ্ঠে মো. আরমান আলী বলেন, হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি আমার সব শেষ। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তখন দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলোনা। মাত্র দুই ঘণ্টার আগুনে আমার সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গরু, ছাগল ও গোয়ালঘরসহ আমার প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। 

তার ভাষ্য, শর্ট সার্কিটে আগুৎ লেগে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মূল্যের দুইটা ফ্রিজিয়ান বকনা গরু এবং প্রায় ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ছাগল পুড়ে মারা গেছে। এছাড়াও ৭০ হাজার টাকা মূল্যের প্রায় পাঁচ মাসের গর্ভবতি একটি দেশী গাভীর শরীর ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে।

প্রতিবেশী বিল্লাল শেখ বলন, তিনি রাত দেড়টার দিকে গিয়ে দেখেন বিশাল আগুন। লোকজন কলস, বালতির পানি দিয়ে আগুন নিভাচ্ছে। আনুমানিক রাত তিনটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এদিকে দিনমজুরের স্বপ্ন পুড়ে গেলেও অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানেন না কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা ও সদস্যরা। তবে ইউএনও মাহবুবুল হক জানান, আগুন লাগার খবর শুনেছেন তিনি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান তদন্ত করে পরে জানানো হবে। লিখিত দরখাস্ত পেলে নিয়ম অনুযায়ী সরকারিভাবে সহযোগীতা করা হবে।


মানবকণ্ঠ/এফআই