
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত এবং ১৬৪ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। সোমবার (২১ জুলাই ২০২৫) দুপুরে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনায় আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালভিত্তিক হতাহতের তথ্য: কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৮ জন আহত। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৭০ জন আহত ও ২ জন নিহত। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৪ জন আহত ও ১১ জন নিহত। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২ জন নিহত। উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ১১ জন আহত ও ২ জন নিহত। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৬০ জন আহত ও ১ জন নিহত। উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১ জন আহত অবস্থা ভর্তি আছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী এবং বিজিবি যৌথভাবে কাজ করছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা সেবা চলছে। সরকার এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
জানা গেছে, বিমানটি চলাচ্ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার তৌকির ইসলাম। পাইলটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে তার এক সহকর্মীকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পরেননি। মাইলস্টোন ক্যাম্পাসে স্কুল ছুটির মুহূর্তে যে ভবনটির ওপর বিমান বিধস্ত হয়, সেখানে মূলত প্লে গ্রুপ থেকে শুরু করে বাচ্চাদের ক্লাস হতো।
এদিকে, আইএসপিআর সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজেআই প্রশিক্ষণ বিমানটি আজ (২১ জুলাই) বেলা ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে।
উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বেলা ১টা ১৮ মিনিটে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় বলে জানানো হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের এক ক্ষুদে বার্তায়। খবর পেয়ে ১টা ২২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর, পূর্বাচল ফায়ার স্টেশনের অন্তত ৮টি ইউনিট সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত এক ফায়ার সার্ভিস কর্মী প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় অন্তত ৬-৭ জন শিক্ষার্থী দগ্ধ হয়েছেন, যাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যোগ দিয়েছে ২ প্লাটুন বিজিবি।
এদিকে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে রোগী আসা শুরু করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সেখানকার আবাসিক চিকিৎসক (আরএস) ডা. শাওন বিন রহমান। অন্তত ৪৫ জন এখন পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউটে গিয়েছেন। এরমধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগী উভয়ই রয়েছেন বলে জানান তিনি।
Comments