
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নকশা অনুমোদন-সংক্রান্ত সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনের নকশা অনুমোদনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে বৃহস্পতিবার রাজউকের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ মে রাজউকের নকশা অনুমোদন-সংক্রান্ত ইসিপিএস সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাসের ঘটনা নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের। জলাভূমি ও উচ্চতা-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ থাকা ভূমিতে ১৫ তলাবিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিটের সুউচ্চ ভবনটির নকশা সব বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাস করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা।
এতে বলা হয়, রাজউক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানার পর প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরও তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়। রাজউক তখনই সার্ভারটি বন্ধ করে দেয় এবং মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পাস করা নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামে এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যাঁর স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়।
তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলে নীলনকশা নামে একটি কম্পিউটারের দোকান ও সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত ২২ মে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা করা হয় মতিঝিলের ওই দোকানটিতে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে দোকানটির সঙ্গে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।
একই সঙ্গে দোকানটির মালিক এনামুলের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউকের নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ ছাড়া দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে ওই সব ভবনের নকশা পাওয়া যায়, যা থেকে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় তাঁদের কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়।
এরপর রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রিয়াজুল ইসলামের নির্দেশনায় ৬ জুন উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করা হয়।
মামলার ২১ নম্বর আসামি ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান নীলাভ নকশাঘরের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ ২২ ও ২৩ নম্বর আসামি সজীব ও মুকুলকে মতিঝিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
Comments