
পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে সীতাকুন্ড কোরবানির পশুর হাটগুলো। শুরুর দিকে হাটগুলোতে কিছুটা ক্রেতাশূন্যতা থাকলেও এখন প্রতিটি হাটে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে, তৈরি হয়েছে ঈদ-উৎসবমুখর পরিবেশ।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার অন্যতম বৃহৎ বাড়বকুন্ড হাইস্কুল এন্ড কলেজ পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, হাটজুড়ে তিল ধারণের জায়গা নেই। কেউ এসেছেন একা, কেউবা পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে গরু কিনতে এসেছে। চারপাশে গরুর ডাক, দরদাম আর ক্রেতাদের আনন্দসব মিলিয়ে এক উৎসবের আবহ। এবারের হাটগুলোতে দেশি গরুর সরবরাহ চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি হাটে গরু কিছু কিছু হাটে মহিষও সারিসারি দেখা যায়। তবুও ক্রেতাদের আগ্রহে ভাটা পড়েনি। কেউ পছন্দের পশু কিনে বাড়ি ফিরছেন, কেউ অপেক্ষা করছেন শেষ মুহূর্তের দামের ওঠানামার জন্য।
উপজেলায় এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৫৬ হাজার ২১৩ টি পশু। উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিস জানিয়েছে, দেশি ঘরোয়া পদ্ধতিতে এবং খামার পর্যায়ে পালিত এসব গবাদিপশুই এবারের কোরবানির চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হবে। চাহিদার তুলনায় পশুর মজুত বেশি থাকায় উপজেলায় পশুর সংকট হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তারা।
প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার উপজেলায় গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়াসহ কোরবানিযোগ্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৬ হাজার ৯৭৮ টি। অথচ উৎপাদন হয়েছে ৫৬ হাজার ২১৩ টি, যা চাহিদার তুলনায় ৯ হাজার ২৩৫ টি বেশি। গত বছর এই চাহিদা ছিল ৪৪ হাজার ৫২৬ টি এবং উৎপাদন হয়েছিল ৫৩ হাজার ৮০৪ টি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, পশুর হাটে প্রশাসনের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিনসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাটে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি হাটে প্রশাসনের মোবাইল টিম নিয়মিত টহল দিচ্ছে। এছাড়া ব্যাপারীদের পশু আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও অতিরিক্ত নজরদারি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, হাটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। অনিয়ম বা বিশৃঙ্খলার কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব মিলিয়ে ঈদুল আজহার আগে সীতাকুন্ডের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে অভাবনীয় প্রাণচাঞ্চল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ, তুলনামূলক স্বাভাবিক দাম এবং প্রশাসনিক নিরাপত্তার কারণে বিক্রেতা ও ক্রেতাউভয়ই সন্তুষ্ট।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এ বছর সীতাকুন্ডের হাটগুলো সফল ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
Comments