Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বামপন্থি শিক্ষার্থীদের জোট ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ থেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি। ২০১৯ সালে শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী ইমি এবার কেন্দ্রীয় সংসদের ভিপি পদে লড়ছেন। দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের অভিজ্ঞতা থেকে খুলনার পাইকগাছার সন্তান ইমি বিশ্বাস করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্যের রাজনীতি নয়; বরং সহাবস্থান ও গণতান্ত্রিক চর্চার ভিত্তিতেই গড়ে উঠবে নিরাপদ ও ভারসাম্যপূর্ণ ক্যাম্পাস।

এক প্রশ্নের জবাবে ইমি বলেন, আমি দেখতে চাই প্রতি বছর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারের আওতায় আনতে হবে। প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। 

দ্বিতীয়ত, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী নিরাপত্তা প্রশ্নে একটি নিশ্ছিদ্র অবস্থান দেখতে চাই। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে চলতে পারছে না। এমনকি ক্যাম্পাসে প্রতিনিয়ত চুরি-ছিনতাই এমনকি মাদক কারবারের মতো ঘটনা ঘটছে। আমি নির্বাচিত হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তায় কঠোর পদক্ষেপ নেব।

তৃতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণ আবাসন নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ খাদ্য ও গবেষণাভিত্তিক একাডেমিক পরিবেশসহ মৌলিক যে বিষয়গুলো আছে, সেসব বিষয় সমৃদ্ধ একটি পরিবেশ আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে চাই। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মেগা প্রজেক্টের অনুমোদন হয়েছে, তা যেন যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয়, আমি সেটি চাইব। 

পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সেল গঠন করে তাদের শরীর-মনের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে আমি বিশেষ নজর রাখতে চাই। 

সবশেষে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য দেখতে চাই। ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক হবে জুনিয়র স্কলার ও সিনিয়র স্কলারের ন্যায়। এ সম্পর্ক প্রভু-দাসের মতো হওয়ার সুযোগ নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন আর কখনো আধিপত্যের রাজনীতি ফিরে না আসে উল্লেখ করে ইমি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি থাকবে। তবে সেটি হবে ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতি, সেটি হবে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের রাজনীতি। ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক সহাবস্থান গড়ে তুলতে হবে। ভিন্নমতকে তার মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। ভিন্নমতকেও রাজনীতি করার অধিকার দিতে হবে।

ডাকসুর এই ভিপি প্রার্থী বলেন, নির্বাচনি পরিবেশ এখন পর্যন্ত বেশ ভালো। সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ডাকসুর নির্বাচনের উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়েছে সবার মাঝে। একটি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে ক্যাম্পাসের পরতে পরতে।

আপনি যদি নির্বাচিত নির্বাচিত নাও হন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আপনার ভূমিকা কেমন হবে-জানতে চাইলে ইমি বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের অধিকার সবার আগে। আগে আমরা বিভিন্ন জায়গায় সংগ্রাম করে অধিকার আদায় করে নিয়েছি। তবে আমি যদি নির্বাচিত নাও হই, তাহলেও আমাদের অবস্থান থাকবে শিক্ষার্থীদের অধিকারের পক্ষে, তাদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আগে যেমন সচেষ্ট ছিলাম, ভবিষ্যতেও সে ধারা অব্যাহত থাকবে।