
অফিস থেকে ধরে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আওয়ামীপন্থী তিন কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন কতিপয় ব্যক্তি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাঁদের মতিহার থানায় হস্তান্তর করা হয়।
তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাবরক্ষক দপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাসুদ, উপপরিচালক আমিনুল হক রাসেল ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার।
আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, আমরা গত সপ্তাহে দাবি জানাতে এসেছিলাম রেজিস্ট্রারের কাছে। তিনি আজকে আমাদের সময় দিয়েছিলেন। আমরা আজ আসার পর তিনি আমাদের পাত্তাই দিচ্ছেন না। স্যার কোনো পদক্ষেপ না নেওয়াই আমরা পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি। আমরা উনাদেরকে লিগ্যাল সেলে আসতে বলি, পরে স্যার উনাদের প্রক্টর দপ্তরে রেখে যান এবং পুলিশকে ইনফর্ম করেন। এখন দেখা যাক তারা কি করেন। আমরা যাদের ধরেছি তারা সবাই এজাহার ভুক্ত আসামি।
আরেক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, এরা সবাই একেকজন আওয়ামী লীগের ক্যাডার। ২০১৮ সালে তারা আমাদের উপর হামলা করেছে। জুলাই আগস্টেও তারা আমাদের উপর হামলা করেছে কিন্তু তারপরেও তারা এখনো চাকরি করে যাচ্ছে। এক বছর হয়ে গেলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আজ আমরা তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দিলাম।
এজাহার ভুক্ত আসামি সেকশন অফিসার পঙ্কজ কুমার বলেন, আমি কখনো শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করিনি। আন্দোলনে আমি বাসাতেই ছিলাম। ৫ আগস্টে আমি বাসা থেকেই বের হয়নি। শুনেছিলাম আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিন্তু কেউ কখনো কিছু বলেনি। আজ হঠাৎ তারা আমাকে ধরে আনছে। কেনো ধরছে আমার জানা নেই
আরেক এজাহার ভুক্ত আসামি আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, সুবহান স্যারের আমলে আমি নিজে ছাত্রলীগের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছি। আমি কখনো শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কিছু করিনি। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করছি কিন্তু আমি চাকরি জীবনে কখনো কোন রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম না। কোন শিক্ষার্থীর উপর কখনো হামলাও করিনি। শুনেছিলাম মামলা হয়েছে কিন্তু বিস্তারিত জানি না। আজ যারা আমাদের ধরেছে মনে হচ্ছে তারা জামায়াত-শিবির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন জুলাই বিপ্লব চেতনা বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ইতিহাস বিভাগের ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. মুস্তফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্নভাবে ছাত্রদের উপর হামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও আছে। কিন্তু তারা আইন অমান্য করে জামিন না নিয়ে এখনো চাকরি করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কোনো দোসর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে থাকতে পারবে না। যেখানে থাকবে সেখানে আমরা প্রতিবাদ জানাব।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি আবদুল মালেক বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তাই তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছি। তারা এজাহার ভুক্ত আসামি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে। মতিহার থানা পুলিশ আমাকে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখিয়েছে তাই আমি তাদেরকে নিয়ে যেতে দিয়েছি। তবে সাবেক শিক্ষার্থীরা যেটা করছে এটা কখনোই কাম্য না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মরত অবস্থায় তারা এভাবে ধরে নিয়ে যেতে পারে না। এটা পুলিশের কাজ পুলিশ করবে। পরর্বতী সময়ে আমি এটা এমন কাজ এলাও করবো না।
Comments