রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার চাঁদনী চক মার্কেটের ব্যবসায়ী কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও অশালীন মন্তব্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মঙ্গলবার মারধরের শিকার হয়েছেন। ঢাবি প্রশাসন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানিয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপপরিচালক ফররুখ মাহমুদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নিতে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে গিয়েছিলেন।

জানা যায়, সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় কাপড় কিনতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলাম, আয়াজুর রহমান এবং এক নারী শিক্ষার্থীসহ চাঁদনী চক মার্কেটে যান। কাপড় দামাদামির এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করে সংশ্লিষ্ট দোকানদার। কটূক্তির প্রতিবাদ করে সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম ও আয়াজুর রহমান। পরে ওই দোকানের ম্যানেজার ও আশেপাশের আরও বেশ কয়েকটি দোকানের লোকজন এসে মব সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে গেলে মব সৃষ্টি করে তাদেরও মারধর করে ব্যবসায়ীরা।

শিক্ষার্থী শাহেদুল ইসলামকে একটি কক্ষে প্রায় ৪০ মিনিট আটকে রেখে ব্যবসায়ীরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এসময় তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। মারধরে আহত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টার ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

পরে ঘটনা জানাজানি হলে অপরাধীদের দ্রুত আটক করে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট থানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফারুক শাহ, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ ও প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যবসায়ীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে পুলিশ তিনজন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে। বাকি অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছে নিউমার্কেট থানা পুলিশ।