
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এক শিক্ষককে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, অনুমোদনহীন ছুটি গ্রহণ এবং প্রশাসনিক আদেশ অমান্য করার অভিযোগে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
বরখাস্তকৃত শিব নাথ পাট্টাদার একোয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রেজিস্ট্রার অফিস থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী শিব নাথ পাট্টাদারকে এই শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। তিনি ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত পূর্ণ বেতনে মোট ২ বছর ৪ মাসের শিক্ষা ছুটি নিয়ে আমেরিকায় পিএইচডি ডিগ্রির জন্য যান। পরবর্তীতে পিএইচডি ডিগ্রির অসমাপ্ত গবেষণা কাজের জন্য আরও ১ বছরের অর্ধ বেতনে এবং অতিরিক্ত ১ বছরের বিনা বেতনে ছুটি মঞ্জুর করান।
তবে, ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি কর্মস্থলে যোগদান করেননি, বরং পুনরায় ছুটির আবেদন ছাড়াই দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকেন। এতে একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়। ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। পরপর তিনবার নোটিশ পাঠানো হলেও তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে ৫৩তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় বিস্তারিত আলোচনা ও পর্যালোচনার পর শিব নাথ পাট্টাদারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩(খ) ধারা অনুযায়ী এটি অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হয়।
আদেশে শিব নাথ পাট্টাদারকে এক মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোগকৃত সকল সম্পত্তি এবং শিক্ষা ছুটির বন্ডের শর্ত অনুযায়ী প্রদেয় অর্থ বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, "জনাব শিব নাথ আমেরিকা থেকে সম্ভবত আর আসবেন না। তাকে বারবার চিঠি দিয়েও বাংলাদেশে আনা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তার অনেক দেনা-পাওনার বিষয় আছে। আমরা তাকে তিনবার নোটিশ দিয়ে সতর্ক করেছি কিন্তু তার কোনো প্রতি উত্তর পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ বিধিমালা অনুযায়ী তাকে আমরা চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করেছি। পরবর্তীতে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রশাসন। এটি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া, এখানে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই।"
Comments