Image description

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে এবার সংহতি প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। বৃহস্পতিবার (৮ মে )দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষার্থীদের পূর্বনির্ধারিত অবস্থান কর্মসূচিতে ২০ জনের বেশি শিক্ষক অংশ নেন।

এ সময় শিক্ষকদের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা উপাচার্যের "স্বৈরাচারী ও অপেশাদার আচরণ, দুর্নীতিগ্রস্ততা এবং মারাত্মক অদক্ষতার" কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের "চরম অধোগতি" নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টিকে "এই অধোগতি ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য" শিক্ষা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আহ্বান জানান।

অবস্থান কর্মসূচি শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে শেষ হয়।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার ও সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায়, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক।

এদিকে, আন্দোলনকারীরা তাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। শুক্রবার অনুষ্ঠাতব্য বিজ্ঞান শাখার ‘এ’ ইউনিটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তারা উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। একইসাথে, পদত্যাগের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আগামী সোমবার থেকে ক্লাস বর্জনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, তারা আশা করছেন ইউজিসি ও আচার্য (রাষ্ট্রপতি) দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে ব্যবস্থা নেবেন। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে আগামীকালের গুচ্ছ পরীক্ষা সফল করাই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সোনিয়া খান সোনিকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত থাকায় কোনো মন্তব্য করতে পারেননি।

অন্যদিকে, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবি সিন্ডিকেট মিটিংয়ে মেনে নেওয়ার পরও কিছু শিক্ষার্থী নতুন নতুন দাবি তুলে আন্দোলন করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এতে নেই। যারা আন্দোলন করছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে, এবং দিন দিন সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর বিরক্ত হয়ে উঠছে। যে বা যারা ইন্ধন দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে তাদেরকে সহজে ছেড়ে দেওয়া হবে না।"

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারের আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক সুজন চন্দ্র পাল এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির লাইব্রেরিয়ান ড. গাজী জহিরুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। এর আগে দুটি ছাত্র হলের প্রভোস্টও পদত্যাগ করেছিলেন।