Image description

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রিকশাচালকদের বাকবিতণ্ডার দৃশ্য চোখে পড়ে। এ তর্ক-কুতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ভাড়া। তাই অনেক রিকশাচালক ক্যাম্পাসের ভেতরে স্বল্প দূরত্বে চলাচল করতে চায় না। এ নিয়েও শিক্ষার্থী-রিকশাচালকদের মধ্যে দেখা দেয় কলহ।
 
শিক্ষার্থী ও রিকশাচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে উভয় পক্ষের সম্মতিতে এ সমস্যার সমাধান করেছে ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসের কোন পয়েন্ট থেকে কোন পয়েন্টে কত ভাড়া তা ঠিক করে দিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি প্রাথমিকভাবে ১০০ রিকশাচালকে দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট পোশাক। সঙ্গে তাদের জন্য উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে পানি খাওয়ার একটি উন্নতমানের বোতল।
 
ক্যাম্পাসে চলাচলকারী রিকশার জন্য দূরত্বভেদে সর্বনিম্ন ১৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ঠিক করা এ ভাড়ার বিষয়ে রিকশাচালকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের অবগত করছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি ভাড়ার একটি চার্ট তারা তুলে দিয়েছেন বিশ্ব  বিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রক্টরের হাতে। বিশ্ব  বিদ্যালয় প্রশাসন এ ভাড়ার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
 
গতকাল রোববার থেকে ভাড়ার এ তালিকা কার্যকর করা হয়েছে। এদিন সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, রিকশাচালকরা তাদের নির্দিষ্ট পোশাক পরে ক্যাম্পাসে চলাচল করছেন। পোশাকের বাইরেও অনেকেই রিকশা চালাচ্ছেন। 
 
এদিকে বিশ্ব  বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রিকশা ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের এ উদ্যোগের কারণে এখন অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। রিকশাচালকরাও বেশি ভাড়া দাবি করতে পারবেন না। তাদের ভাড়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে।
 
আল আমিন নামে চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাম্পাসে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করে দেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীর দাবি ছিল। অনেক রিকশাচালক দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া চাইত। এখন তা আর হবে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা খুশি।
 
কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্ধারিত এ ভাড়া নিয়ে তাদেরও খুব বেশি আপত্তি নেই। আগে অনেক শিক্ষার্থী নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও কম ভাড়া দিত। এখন তা করার সুযোগ থাকবে না। আনোয়ার হোসেন নামে একজন রিকশাচালক বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই কয়েকবছর ধরে রিকশা চালাই। শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত এসে অনেকে ২০ টাকা ভাড়া দিতেন। অথচ এখানে ভাড়া কমপক্ষে ৩০ টাকা। এখন এটি আর কেউ করতে পারবেন না।
 
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমরা শিক্ষার্থী ও রিকশাচালকদের সঙ্গে কথা বলে এ ভাড়া চূড়ান্ত করেছি। আশা করি এটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ১০০ চালককে নির্দিষ্ট পোশাক দিয়েছি। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ভাড়া রাখবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।
 
তিনি আরও বলেন, অনেক চালক কম দূরত্বের হলগুলোয় যেতে চান না। ক্যাম্পাস এলাকায় নির্ধারিত ভাড়ায় সবাই সবখানে যেতে পারবে। আমরা সামনের দিনগুলোয় শিক্ষার্থী ও চালকদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাকসুদুর রহমান বলেন, এটা একটা ভালো উদ্যোগ। এ বিষয় নিয়ে আমরা কয়েক দফায় রিকশাচালকদের সঙ্গে বসেছি। রোববার থেকে আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা শুরু করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অফিস এটি বাস্তবায়নে কাজ করছে।