নাঙ্গলকোটে জমিতে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে দু'গ্রুপের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১৫

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দুই গ্রুপের দফায়-দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৫ জন ছররা গুলিবিদ্ধ ও ১০ জন আহত এবং বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার উপজেলার বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ আলীয়ারা গ্রামের ছালেহ আহম্মদ মেম্বার ও আবুল খায়ের মেম্বার গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে যৌথ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, রুস্তম আলীর স্ত্রী শরীফা বেগম, ছেলে তারা মিয়া, দুলাল মিয়ার ছেলে রিয়া, আবুল খায়েরের ছেলে ফরিদ, আশরাফুল, সালেহ আহাম্মদের ছেলে নূরুদ্দিন, আব্দুর রহমানের ছেলে জামাল, আবুল খায়েরের ছেলে শহীদ, তারা মিয়ার ছেলে তামিম, এনাম মিয়ার ছেলে জাহিদুল, রোকম আলীর ছেলে কবির আহাম্মদ, রুস্তম আলীর ছেলে আবু তাহের, বশির আহাম্মদের স্ত্রী হোশনেয়ারা, জাকির হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম,ও তার ছেলে ওসমান।
আহতরা হলেন, বাহার উদ্দিনের স্ত্রী পরান বেগম, দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জয়, আলা উদ্দিনের স্ত্রী মরিয়ম বেগম, জালাল আহাম্মদের ছেলে জিয়াউল হক, আব্দুল মোনাফের ছেলে আবুল কাশেম, মফজলের ছেলে বাহাদুর, আলী আহাম্মদের ছেলে সোহাগ, শাহ আলমের ছেলে সুমন।
জানা যায়, গত ১৩ জুলাই ওই গ্রামের ছালেহ আহম্মদের গরু আবুল খায়েরের ছেলে শেখ ফরিদের জমির ধান খায়। এনিয়ে ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর লোকজন আবুল খায়ের গোষ্ঠীর লোকজনের উপর হামলা করে। এসময় আবুল খায়েরের ৪ ভাই আলাউদ্দীন মেম্বার, পেয়ার আহম্মদ, জাফর আহম্মেদ, কালাম, সোহাগ ও মন্নানের বড়িঘরে হামলা ও লুটপাট করেন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ থানায় ৪টি ও আদালতে ১টিসহ ৫টি মামলা দায়ের করা হয়।
বৃহষ্পতিবার (২৪জুলাই) রাতে থানা পুলিশ মামলার আসামী ছালেহ আহম্মেদ গোষ্ঠীর শেখ ফরিদকে মুরাদনগর থেকে আটক করে। তার আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর লোকজন আলিয়ারা উত্তরপাড়া জাফর আহম্মদের দোকানের সামনে আবুল খায়ের গোষ্ঠীর শেখ আহম্মদের উপর হামলা করে। পরে উভয়পক্ষ এল জি, রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে দফায়-দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গুলিবিদ্ধদের কুমেক হাসপাতালে রেফার করেন।
হামলায় আহত আবুল খায়ের গোষ্ঠীর আবুল কাশেম জানান, ছালেহ আহম্মদের ছেলে নুরউদ্দিন, রিয়াদ ও দুলাল এল জি দিয়ে আমাদের গোষ্ঠীর লোকজনের উপর গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধসহ ১৪-১৫ জন আহত হয়েছে।
ছালেহ আহম্মদ গোষ্ঠীর রিয়াদ হোসেন বলেন, আবুল খায়ের গোষ্ঠীর আবদুল মন্নানের ছেলে তৌহিদ, ইলিয়াছের ছেলে আলমগীর, আলাউদ্দিনের ছেলে আজিম, আবুল কাশেমের ছেলে জুয়েল, ইসমাইলের ছেলে তোতা মিয়াসহ বেশ কয়েকজন এলজি নিয়ে গুলিসহ দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের ১২ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়।
এঘটনায় ছালেহ আহম্মদ মেম্বার ও আবুল খায়ের মেম্বারের মুঠো ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
থানার ওসি একে ফজলুল হক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সংঘর্ষকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে গুলিবিদ্ধ কাউকে পাওয়া যায় নাই। বর্তমানে এলাকাটি নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
Comments