Image description

পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মাসুদ ইকবাল বলেছেন, ২০২৬ সালের জুলাই থেকে পূর্নোদ্যমে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করবে পায়রা বন্দর। ১৯টি কম্পোনেন্ট বাস্তবায়নের মাধ্যমে এটি একটি পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তরিত হবে। বর্তমানে এর চ্যানেলের গভীরতা সাড়ে ছয় মিটারের বেশি। এখানে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিকটন পন্যবাহী মাদার ভসেল ভিড়তে পারে। 

তিনি বলেন, মেইনটান্যান্স ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এর গভীরতা সাড়ে ১০ মিটার পর্যন্ত উন্নীত করা গেলে অন্যান্য সমুদ্রবন্দরের চেয়ে এটি গভীর হবে এবং বড় জাহাজ এখানে ভীড়তে পারবে। এজন্য দুবছরের একটি প্রকল্প নেয়া হবে এর মধ্যেই দুটো ড্রেজার ক্রয় করে নিজস্ব তত্বাবধানে ড্রেজিং করে খরচ সংকোচন করা হবে। পার্শবর্তী দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা হ্যান্ডলিং করেই ড্রেজিংয়ের খরচ মেটানো সম্ভব হবে। দেশের অন্যান্য বন্দরের তুলনায় রাজধানীর সাথে এর নৌ ও সড়ক পথের দুরত্ব কম থাকায় সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী নদী পথে ২৪/৭ কন্টেইনার পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া ৬ লেন সড়ক নির্মিত হলে যানজটবিহীন সড়ক পথে কার্গো পরিবহন সুবিধা সৃষ্টি হবে। 

বুধবার সকালে বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ভবন মিলনায়তনে পায়রা বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি, সম্ভাবনা এবং অপারেশনাল কার্যক্রম বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও অংশীজনদের মধ্যে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, আধুনিক ইক্যুইপমেন্ট সমৃদ্ধ দেশের একক দীর্ঘতম ৬৫০ মিটার জেটি, ৩,২৫,০০০ বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড, ১০,০০০ বর্গমিটার আধুনিক সিএফএস শেড, বন্দরের অভ্যন্তরে চ্যানেলে নিরাপদ অবস্থানে একই সময়ে ১৫টি পর্যন্ত বাণিজ্যিক জাহাজের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা থাকায় এই বন্দরে জটবিহীন বার্থিং/আন-বার্থিং সুবিধাসহ দ্রুততম সময়ে পণ্য লোডিং/ আনলোডিং এর ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া পায়রা বন্দরের নিজস্ব টার্মিনালের অপারেশন শুরুর আগেই অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও ইতোমধ্যে পায়রা বন্দর ৫২৯ টি বৈদেশিক জাহাজ ও ৩৪২৬টি দেশীয় লাইটারেজ নিরাপদে হ্যান্ডেল করতে সক্ষম হয়েছে এবং এ থেকে সরকার প্রায় ২০৭৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। বন্দরকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে এখানে শিল্প ক্ষেত্রে বড় বিনিয়োগ হয়েছে এবং আরো বহু বিনিয়োগ অপেক্ষমান আছে। বন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে সচল হওয়ার পর বন্দর ও বন্দর-নির্ভর যে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে সেটা দক্ষিণাঞ্চলের একটি তুলনামূলক অনগ্রসর জনপদকে সমৃদ্ধ করা তথা দেশের অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব অবদান রাখবে। 

দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বন্দরের অগ্রযাত্রায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহায়তার জন্য তিনি সকলকে আহবান জানান।

এসময়, বন্দরের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং ভবিষৎ পরিকল্পনা' নিয়ে বক্তব্য রাখেন, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর মোহাম্মদ আব্দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পায়রা বন্দরের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মোঃ জামাল উদ্দিন চৌধুরী। 

বক্তব্য রাখেন, মোংলা, পায়রা, পানগাঁও এবং ল্যান্ড পোর্ট পরিচালক সুমন হাওলাদার, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ ক্লিয়ারিং এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন পরিচালক, মামুনুর রশিদ, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের আহবায়ক মোঃ জাকির হোসেন প্রমুখ।

সভায় বন্দরের কর্মকর্তাগণসহ বিভিন্ন দপ্তর/ সংস্থার প্রতিনিধিগণ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বন্দর ব্যবহারকারী-অংশীজন এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বক্তারা বন্দরের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে সেখান থেকে উত্তরনের দাবি জানান।