চার মাসে আশুলিয়ায় ৪২২টি মিসকেস নিষ্পত্তি, নিয়মিত মোবাইল কোর্টে জবাবদিহিতা

সরকারি সেবায় গতি আনতে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠ প্রশাসনের তৎপরতা আশুলিয়ায় স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে আশুলিয়া উপজেলা প্রশাসন ৪২২টি মিসকেস নিষ্পত্তি করেছে। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা, ভোক্তা অধিকার ও ভূমি ব্যবস্থাপনায়ও কার্যকর অভিযান চালানো হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জানুয়ারিতে ১০২টি, ফেব্রুয়ারিতে ৮৬টি, মার্চে ১১৫টি, এপ্রিলে ৮০টি এবং মে মাসের প্রথম সাতদিনে ৩৯টি মিসকেস নিষ্পত্তি করা হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, মিসকেস নিষ্পত্তির এই ধারাবাহিকতা প্রশাসনের সক্রিয়তা ও দায়বদ্ধতার একটি ইতিবাচক উদাহরণ।
মোবাইল কোর্টে সচেতনতা ও শাস্তি
পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনস্বার্থে পরিচালিত একাধিক মোবাইল কোর্টে বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাটজাত পণ্যের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে তিনটি মামলায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
একইসঙ্গে, অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটার দায়ে ৫০ হাজার টাকা এবং অতিরিক্ত যাত্রীভাড়া আদায়ের কারণে তিনটি মামলায় আরও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভূমি ও পরিবেশ—দুই ক্ষেত্রেই সক্রিয় প্রশাসন
ভূমি ব্যবস্থাপনায় বড় রাংগামাটিয়া মৌজায় অভিযান চালিয়ে প্রায় এক একর খাসজমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার খাসপুকুর চিহ্নিত করে সেগুলোর সংরক্ষণ ও সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগে।
অন্যদিকে, পরিবেশ রক্ষায় অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধেও অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন। পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকা এবং চিমনির অনিয়ম থাকায় এসব ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে চিমনি উচ্ছেদ করা হয়।
জুলাই গণহত্যা মামলা ও লাশ উত্তোলন
আদালতের নির্দেশে আশুলিয়ার আলোচিত ‘জুলাই গণহত্যা’র শহীদ পাঁচজনের মরদেহ উত্তোলন করে প্রশাসন। মামলার তদন্ত ও আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
প্রশাসনের বক্তব্য ও স্থানীয় প্রত্যাশা
আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আক্তার বলেন, “আমরা প্রতিনিয়ত জনস্বার্থে অভিযান পরিচালনা করছি। সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়ন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসন নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।”
স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের এই ধারাবাহিক অভিযান এলাকাজুড়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং জনসচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। তবে তারা চান, এই কার্যক্রম যেন কেবল কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য না হয়ে নিয়মিত চলমান থাকে।
Comments