Image description

বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের আরোপিত পাল্টা শুল্কের হার ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনাকে রপ্তানি খাতের জন্য একটি ‘সন্তোষজনক অবস্থা’ হিসেবে দেখেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।  শুক্রবার দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

আমীর খসরু বলেন, "এটা জয়-পরাজয়ের কোনো বিষয় না। যে শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে সে হিসেবে প্রতিযোগিতায় আমরা তুলনামূলকভাবে একটা সন্তোষজনক অবস্থানে আছি। আমরা ২০ শতাংশ, পাকিস্তান ১৯ শতাংশ, ভিয়েতনাম ২০ শতাংশ আর ভারতে ২৫ শতাংশ। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, সার্বিকভাবে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে ট্যারিফের ফিগারটা সন্তোষজনক।" তিনি বলেন, "ট্যারিফ বিষয়ে আমাদের প্রতিযোগীদের সঙ্গে যেটা হয়েছে সেটা ঠিকই আছে। এটা সন্তাষজনক।"

তবে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের নতুন এই হারের পেছনে কী আছে, সে প্রসঙ্গ টেনে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "পুরো নেগোসিয়েশনের সার্বিক বিষয়টা তো আমাদের জানা নেই। আমরা শুধু ট্যারিফের বিষয়টা জানি। সার্বিক বিষয়টা জানার পরে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে পারব। এর (ট্যারিফ) বিপরীতে আর কী দিতে হয়েছে সেটা না জানা পর্যন্ত তো এর ইমপ্যাক্টটা কী হবে সেটা আমরা বলতে পারছি না।"

এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, "নেগোসিয়েশনের পেছনের যে বিষয়গুলো, এটা তো একটা প্যাকেজ। এখানে অনেকগুলো সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু ট্যারিফের কত পারসেন্ট কমানো হলো সেটা তো সিদ্ধান্ত হয়নি। এই সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কী দাবি-দাওয়া ছিল এই বিষয়গুলো প্রকাশ হলে আমরা বুঝতে পারব।"

বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক নির্ধারণে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন, এখন কী তারা স্বস্তির মধ্যে এসেছেন কি না, জানতে চাইলে এই বিএনপি নেতা বলেন, "আমি তো বলছি, আপাতত ২০ শতাংশ ট্যারিফ নির্ধারণ অন্তত এই মুহূর্তে আমাদের রপ্তানি বাজার বাধাগ্রস্ত করবে না। সুতরাং এই মুহূর্তে এটা সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত।"

সম্প্রতি বাণিজ্য সচিবের যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার কথা বলা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, "কিছু তো করতেই হবে। কারণ আমেরিকানদের পুরো ট্যারিফের বিষয়টা হচ্ছে তাদের পণ্য রপ্তান্তির স্বার্থে। সেজন্য তো এই অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বাংলাদেশ কতটুকু অ্যাবজর্ব করতে পারবে, আমাদের অর্থনীতি কতটুকু এবজর্ব করতে পারবে, আমাদের ব্যবসায়ীরা কতটুকু এবজর্ব করতে পারবেন, আমাদের ইকোনমি কতটুকু এবজর্ব করতে পারবে সেই বিষয়গুলো আলোচনার বিষয়।" তিনি বলেন, বিস্তারিত জানলে মন্তব্য করতে পারবেন।

একই সঙ্গে তিনি মনে করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পুরো বিষয়টা খোলাসা করা উচিত।

আমীর খসরু বলেন, "বাণিজ্য শুধু আমাদের আমেরিকার সঙ্গে নয়, অন্যান্য দেশেও আমাদের পণ্য রপ্তানি হয়। সেই জায়গাগুলো বিবেচনায় নিয়ে সম্মিলিতভাবে আমরা কোথায় দাঁড়াচ্ছি সেটা বুঝতে হবে, পর্যালোচনা করতে হবে।" তিনি আরও বলেন, রপ্তানিকে আরও বেশি ডাইভারসিফাই করতে হবে। শুধু আমেরিকা নির্ভরশীল অর্থনীতি হতে পারে না, সেটাই হচ্ছে আমাদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, "সেজন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিবেশ, অর্থনীতিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ এবং আমাদের যে ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ইউজ অব ড্রিম বিজনেস যেটা অত্যন্ত নিচে এখন, সেটাকে এই ডিরেগুলেশনের মাধ্যমে, রিভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। বড় ধরনের পরিবর্তন আমাদের আনতে হবে।"