Image description

গাজীপুরের বোর্ড বাজারের বাসিন্দা তাছলিমা খাতুন (৪০)। তার দুটি কিডনিই অকেজো। প্রতি সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিস (রক্ত পরিষ্কার) করতে হয়। ডায়ালাইসিস ও আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ প্রতি মাসে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লাগে। গত তিন বছরে কমপক্ষে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্যও প্রয়োজনীয় অর্থ এবং দাতা না থাকায় কিডনি দেওয়া যায়নি তাকে। আর চিকিৎসা ব্যয় জোগাতে তিনি এখন নিঃস্ব ও ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে তার দুই সন্তানের পড়াশোনা। টাকার অভাবে মাঝখানে চিকিৎসাও বন্ধ হয়ে হয়ে গিয়েছিল। এখন শরীর আরও খারাপ হওয়ায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (নিকডু) হাসপাতালে সেবা নিতে এসেছেন।

শুধু তাছলিমা নন, তিনটি হাসপাতালের অন্তত ১০ জন ডায়ালাইসিস রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, দীর্ঘমেয়াদি এ চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে, এমনকি টাকার অভাবে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। এ ছাড়াও কিডনি ডায়ালাইসিসের জন্য সরকার নির্ধারিত কোনো ফি না থাকায় ইচ্ছেমতো টাকা নেওয়ারও অভিযোগ করেছেন রোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে একবার ডায়ালাইসিসের খরচ ৪০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে লাগে ৩০-৪০ হাজার টাকা। আর ওষুধপত্রসহ অন্য খরচ তো আছেই।

চিকিৎসকরা জানান, দেশে কিডনি রোগী বাড়লেও ডায়ালাইসিস সেবার সক্ষমতা বাড়েনি। আর ডায়ালাইসিস চালিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল এবং যা বেশিরভাগ রোগীই বহন করতে পারেন না। ডায়ালাইসিস শুরু করে ৯০ শতাংশ রোগী অর্থাভাবে তিন থেকে চার মাসের মধ্যে চিকিৎসা বন্ধ করে দেন। মাত্র ১০ শতাংশ কিডনি রোগীকে ডায়ালাইসিস সুবিধা দেওয়া যায়। আর ডায়ালাইসিস করে বেঁচে থাকতে রোগীদের ১৫-২৫ শতাংশকে নিজেদের সম্পদ বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।

তারা জানান, দেশে প্রায় ২ কোটি কিডনি রোগী রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ হাজারের মতো মানুষের ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হয়। মাত্র ১০ হাজার মানুষ এ সুযোগ পান। আর ৭৫ ভাগই মারা যায় ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি সংযোজনের চিকিৎসার অভাবে। এ ছাড়া হঠাৎ করে কিডনি বিকল হয়েও প্রতি বছর আরও ২০ হাজার রোগী মারা যায়।

এদিকে পাওনা পরিশোধ না করায় ভারতীয় প্রতিষ্ঠান স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিসেসের সঙ্গে সরকারের জটিলতা সহসাই কাটছেই না। বরং সংকট আরও ঘনীভূত হচ্ছে। বকেয়ার দাবিতে রাজধানীর জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল গত রোববার স্যানডোর ছয় ঘণ্টা এবং পরদিন তিন ঘণ্টা ডায়ালাইসিস বন্ধ রাখে। পূর্ব ঘোষণা না থাকায় এ সময় ডায়ালাইসিস নিতে আসা রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আর চট্টগ্রাম মেডিকেল ডায়ালাইসিস কার্যক্রম একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। যদিও আন্দোলনের মুখে পরে আবার তা চালু করা হয়। এর মধ্যে সংস্থাটি হুমকি দিয়ে নোটিসও দিয়েছে। এ নিয়ে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ করার ঘোষণায় সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত বছরও সরকারি এ দুই প্রতিষ্ঠানে ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দিয়েছিল স্যানডো। ডায়ালাইজার ব্যবহারে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করারও অভিযোগ করেছেন রোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে সরকার ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলে মোট ১৬৪টি ডায়ালাইসিস সেন্টার রয়েছে। সব মিলিয়ে ৭০০টি ডায়ালাইসিস মেশিনে দৈনিক ১০ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এর বেশিরভাগ ঢাকায়। রাজধানীর বাইরে ডায়ালাইসিসের তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই।

চিকিৎসকদের মতে, দেশে দুই ধরনের ডায়ালাইসিস চিকিৎসা রয়েছে। হিমোডায়ালাইসিস ও পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস। কী ধরনের ডায়ালাইসিস কার জন্য প্রযোজ্য হবে তা নির্ভর করে রোগীর ওপর। সাধারণত সব রোগীর জন্য এক ধরনের ডায়ালাইসসিস করা হয় না। কিডনি রোগীর একবার ডায়ালাইসিস করতে ডায়ালাইজারসহ ২৫ ধরনের উপকরণ লাগে।

হিমোডায়ালাইসিস করতে হয় মেশিনের মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে রোগীর রক্ত শরীরের বাইরে স্থাপিত মেশিনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। মেশিন শুধু বর্র্জ্য পদার্থ রক্ত থেকে বের করে নেয়। ক্যাথেটারের মাধ্যমে শিরাপথের রক্ত মেশিনে যায়, পরিশোধিত হয়ে অন্য ক্যাথেটারের মাধ্যমে আবার শরীরে আসে। এ ক্ষেত্রে রোগীদের সপ্তাহে দুই-তিনবার ডায়ালাইসিসের জন্য হাসপাতালে যেতে হয়। প্রতি সেশনে সাধারণত চার ঘণ্টা লাগে। পেরিটোনিয়াল ডায়ালাইসিস মূলত বাড়িতে বসেই করা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কম খরচে দেশের দরিদ্র কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস সুবিধা দিতে আট বছর আগে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে চালু হয় স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিসেস। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) চুক্তির মাধ্যমে ২০১৫ সাল থেকে এ সুবিধা চালু রেখেছে সরকার। ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালে সেবা দিচ্ছে তারা। মোট ডায়ালাইসিসের ১০ শতাংশ করছে তারা। বকেয়া পরিশোধ নিয়ে গত সপ্তাহে স্যানডোরের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও এখন পরিশোধ করেনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কিডনি ইনস্টিটিউটে সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চার শিফটে ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু থাকে। এর মধ্যে সরকারিভাবে যাদের কার্ড ইস্যু করা আছে তাদের ডায়ালাইসিস করতে খরচ হয় ৫৩৫ টাকা। আর যাদের কার্ড নেই তাদের খরচ হয় হয় ২ হাজার ৯৩৫ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১২০-১৪০ জন রোগী এখান থেকে ডায়ালাইসিস করে থাকেন।

ঢাকায় জাতীয় কিডনি রোগ ইনস্টিটিউটে ৬৯টি ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৫টি মেশিনে সেবা দেয় স্যানডোর। রোগীদের কাছ থেকে সরকারি খরচের কাছাকাছি অর্থ নেয় তারা। বাড়তি খরচ সরকার ভর্তুকি হিসেবে স্যানডোরকে দেয়। দেশের সরকারি হাসপাতালে প্রতি সেশনে খরচ হয় সাধারণত ৪০০ টাকা। আর স্যানডোর নেয় ৫৩৫ টাকা। তবে চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৫ শতাংশ দাম বাড়ায় স্যানডোর।

কিডনি হাসপাতালে স্যানডোরের এক নোটিসে বলা হয়, আমাদের ৩১ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ রেখে ডায়ালাইসিস সেবা চালু রাখলেও নগদ অর্থ না থাকায় কাঁচামাল ক্রয় করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। তাই ডায়ালাইসিস রোগীদের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটে নিয়োজিত স্যানডোরের ব্যবস্থাপক নিয়াজ খান বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মিলে সরকারের কাছে বকেয়া ৩১ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ চিঠিতে ২১ জানুয়ারির পর সেবা বন্ধের কথা বলা হয়। আমাদের কর্মকর্তারা প্রতিদিন যোগাযোগ করছেন কিন্তু এখনও সাড়া পাচ্ছেন না।


ডায়ালাইসিস বন্ধ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সেবা চালু রেখেছি কিন্তু কাঁচামাল শেষ হয়ে গেলে আমরা সেবা দিতে পারব না। সুতরাং আমাদের বন্ধ করতে হবে না। যেকোনো সময় এমনিতেই বন্ধ হতে পারে।

কিডনি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. এএফএম আক্তার হোসাইন সময়ের আলোকে বলেন, স্যানডোর ডায়ালাইসিস বন্ধ করার পর আমাদের পক্ষ থেকে বিষয়টি মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে জানানো হয়েছে। এখন ঠিকভাবে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে, আশা করছি আর কোনো সমস্যা হবে না।

রাজধানীতে কিডনি হাসপাতাল ডায়ালাইসিস করতে আসা মানিকগঞ্জের বাসিন্দা আমির হোসেন। পানি জমে তার শরীর ফুলে গেছে। কথা বলতে পারেন না। পাশে বসা তার স্ত্রী মাহমুদা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার স্বামীর ২০১৯ সালে কিডনি জটিলতা দেখা দেয়। ওষুধ সেবনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন তিনি। এখন তার দুটি কিডনিই নষ্ট। শুরুতে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে ডায়ালাইসিস করিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। তিনি বলেন, গত ছয় মাসে আমার ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। জমানো টাকা, জমি-জমা, অলংকার যা ছিল সব বিক্রি করে রাস্তার ফকির হয়ে গেছি।

ফরিদ নামের আরেক রোগীর স্বজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সপ্তাহে আমার দুবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। শুনছি চট্টগ্রামের মতো এ হাসপাতালেও ডায়ালাইসিস বন্ধ করে দেওয়া হবে, তাহলে আমার যাব কোথায়, আমরা গরিব মানুষ। টাকার জন্য ক্লিনিকে যেতে পারি না। তাহলে তো মরা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না।

রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে কথা হয় জেসমিন আরার সঙ্গে। তিনি বলেন, এখানে সপ্তাহে দুবার ডায়ালাইসিসে আমার খরচ হয় ২ হাজার ৮০০ টাকা। আর ওষুধ এবং আসা-যাওয়ার খরচ তো আছে। মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমার ২৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু সবার তো এ সামর্থ্য নেই। তিনি বলেন, আমি অনেককেই চিনি তারা টাকার জন্য ডায়ালাইসিস করতে পারছে না। আবার অনেকেই মারা গেছে। ডায়ালাইসিসের খরচ জোগান দিতে গিয়ে পুরান ঢাকার একটি বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে বলে জানান তিনি।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, তাদের হাসপাতালে কয়েক ক্যাটাগরিতে ডায়ালাইসিস করা হয়। তাদের মধ্যে দরিদ্র ১ হাজার ৩০০ টাকা, নিম্ন মধ্যবিত্ত ১ হাজার ৭০০, মধ্যবিত্ত ২ হাজার ১০০, ধনী ২ হাজার ৫০০ টাকা। আগে অতি দরিদ্রদের সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও এখন তা দেওয়া হয় না। সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করার ক্ষেত্রেও রয়েছে বিশেষ সুবিধা।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের ৩৯ শতাংশ রোগী আর্থিক সংকটের কারণে কয়েকটি ডায়ালাইসিস করানোর পরে তা আবার বন্ধ করে দেয়। এদের বেশিরভাগই দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য। শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের নেফ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রতন দাস গুপ্ত এ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, দুটি কিডনিই বিকল হয়ে পড়লে কিডনি প্রতিস্থাপনের বিকল্প নেই। যতদিন কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হয় না, ততদিন নিয়মিত ডায়ালাইসিস করতে হয়। কিন্তু আর্থিক সংকট, পরিবহন সুবিধা ও রোগীকে নিয়ে আসবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় এবং একজন রোগীকে নিয়ে আসতে খরচ বেশি হয়। অর্থাৎ পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতার অভাবের কারণেও অনেকের ডায়ালাইসিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের একটা প্রকল্প রয়েছে; কিন্তু তিন বছর হয়ে গেলেও তা এখনও আলোর মুখ দেখেনি। সেই প্রকল্প যদি বাস্তবায়ন হতো তাহলে জেলা পর্যায়ে রোগীরা কম খরচেই ডায়ালাইসিস করতে পারত একং খরচও কম হতো। ডায়ালাইসিস সেবা জেলা ও উপাজেলা পর্যায়ে চালু করা উচিত বলেও মনে করেন এই চিকিৎসক।


শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করাতে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তানভীর হাসান নামের এক রোগী। তিনি বলেন, এখানে ৪০০ টাকা ডায়ালাইসিস করা হলেও ডাইলোজার, ব্লাডসেট, মাইক্রো সেট, পাউডার এবং পানিও আমাদের কিনতে হয়। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে তা লাগে না। কম টাকায় সেবা নিতে এসে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বলেও জানান তিনি। গত পাঁচ বছরে তার ২০ লাখ খরচ হয়েছে। তবে আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় এখন চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে।

কিডনি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ সময়ের আলোকে বলেন, সারা পৃথিবীতে কিডনিসহ নানা জটিল রোগের চিকিৎসার ব্যয় সরকার বহন করে। কিছু দেশ আছে যারা ইন্সুরেন্সের মাধ্যমে কিডনি প্রতিস্থাপন এবং ডায়ালাইসিস করার সুবিধা পায়। কিন্তু আমাদের দেশে সেই ব্যবস্থা নেই। নিজের পকেট থেকেই রোগীদের সব অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আমরা গবেষণায় দেখেছি, দেশে ২৫ শতাংশ সামর্থ্যবান রোগী ডায়ালাইসিস করাতে পারে। বাকি ৭৫ শতাংশই কয়েক দিন করার পর তা বন্ধ করে দেয়। ফলে তারা অকালেই মারা যায়। যদিও মানুষের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু ডায়ালাইসিসের রোগীদের সেবার মান তেমন বাড়েনি। তাই প্রতি জেলায় যদি ১০ বেডের একটি ডায়ালাইসিস সেন্টার থাকত তাহলে দরিদ্র অনেক রোগী সেবা পেত এবং মৃত্যুও কম হতো।