রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস একটি যৌক্তিক দাবি: রিজওয়ানা

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস একটি যৌক্তিক দাবি। এটা নিয়ে হতাশা ছড়ানোর কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সোমবার (১৬ জুন) দুপুর ২ টার দিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে স্থাপিত 'রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়' এর নামে ১০০ একর জায়গা পরিদর্শন শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আপনেরা (বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা) নিজস্ব ক্যাম্পাসের জন্য এতো বছর ধরে চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশে অনেক বছর চেষ্টা ছাড়া কোন জিনিসটা হয়? শুধু আপনেরা চেষ্টা করছেন না, আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এরকম চেষ্টা করছেন। আমরা সংস্কারের কথা এই জন্য বলি, যেন সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পটা একনেকে ওঠেছিল। নিজস্ব ক্যাম্পাস লাগবে। এ ব্যাপারে কারও কোন দ্বিমত নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গাটা কেমন ও উপযোগী কিনা, মূলত আমার এটাই দেখতেই আসা।
এরআগে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঢাকা থেকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী একাডেমিক ভবন-৩ এ এসে পৌঁছান তিনি। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম হাসান তালুকদার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
পরে একাডেমিক হলরুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস সম্পর্কিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরপর বাঘাবাড়ী ঘাট থেকে বড়াল নদী পাড়ি দিয়ে তিন নদীর (বড়াল, গোহালা ও করতোয়া) মোহনায় অবস্থিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের জায়গা পরিদর্শন ও বৃক্ষরোপণ করেন রিজওয়ানা।
এসময় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সুমন কান্তি বড়ুয়া, ট্রেজারার প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস পায়নি আজও। যদিও ২০১৮ সালে সেটির প্রকল্প প্রস্তাব করা হলেও ৮ বার সংশোধন আর পুনর্গঠনের গোলকধাঁধায় আটকে যায়। পরে শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে নানান কর্মসূচি পালন করেন। গত ফেব্রুয়ারিতে ৯ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ৫৯৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখান থেকেও ৮০ কোটি টাকা কমিয়ে অনুমোদনের সুপারিশ করে পরিকল্পনা কমিশন। পরবর্তীতে ৬ মে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রকল্প প্রস্তাবটি একনেক সভায় অনুমোদন পায়। এতে বহুল প্রতীক্ষিত স্থায়ী ক্যাম্পাসের খবরে উচ্ছ্বসিত হয় শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে ভাড়া বাসায় প্রশাসনিক ও অন্য কলেজ ক্যাম্পাসে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
Comments