'দেশকে ডিজিটাল ডিভাইস রপ্তানিকারক রূপান্তরে কাজ করছে সরকার'


  • অনলাইন ডেস্ক
  • ২৪ মে ২০২৩, ১৯:০০

বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের যে চাহিদা, তার ৯৫ শতাংশই এখন দেশের কারখানায় উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের হাব ও রপ্তানিকারক দেশে রূপান্তরে কাজ করছে সরকার। এরইমধ্যে দেশে চাহিদার ৯৫ শতাংশ মোবাইল ফোন উৎপাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।'

বুধবার (২৪ মে) নারায়ণগঞ্জের মেঘনা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিক জোনে ট্রান্সশান হোল্ডিংসের মোবাইল ফোন উৎপাদন কারখানা 'আই স্মার্ট ইউ ফ্যাক্টরি' উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকায় নিজ দপ্তর থেকে এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।

মোবাইল ফোন উৎপাদনশিল্পে বাংলাদেশের বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ছোটখাটো কিছু সংকট আছে। তবুও সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় মোবাইল ফোন রপ্তানির একটি বড় বাজার হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।'

মোস্তাফা জব্বার বলেন, 'বাংলাদেশে উৎপাদিত ডিজিটাল যন্ত্রের গুণগতমান নিশ্চিত করার পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়নের প্রতি মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৬ আগস্ট ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন জাতিকে দেখিয়েছিলেন, ২০১৭ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সহযোগিতায় তা আজ পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।'

তিনি বলেন, 'সরকারের প্রযুক্তিবান্ধব নীতির কারণে দেশে বিশ্বমানের ১৫টি মোবাইল কোম্পানি মোবাইল ফোন কারখানা স্থাপন করেছে। আরও বেশ কয়েকটি কারখানা স্থাপন পাইপলাইনে আছে।'

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন ও ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে বঙ্গবন্ধুর রোপণ করা বীজটি চারাগাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ সাল থেকে গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তা আজ বিরাট মহিরূহে রূপান্তরিত হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'দেশে মোবাইল ফোনের অভিযাত্রা ১৯৮৯ সালে সীমিত আকারে শুরু হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে টু-জি, ২০১৩ সালে থ্রি-জি, ২০১৮ সালে ফোর-জি ও ২০২১ সালে ফাইভ-জি প্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করেন।'

দেশের ৯৮ শতাংশ এলাকায় মোবাইল ফোনের ফোর-জি নেটওয়ার্ক পৌঁছে গেছে উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, 'দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ ও তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি। ২০০৮ সালে সাড়ে ৭ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো, যা বর্তমানে ৪১০০ জিবিপিএসে উন্নীত হয়েছে। দেশে সে সময় মাত্র ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর স্থলে বর্তমানে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।'

স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা চালুর জন্য ট্রান্সশান হোল্ডিংসের উদ্যোগের প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, 'এটি স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং এর মাধ্যমে 'মেইড ইন বাংলাদেশ' উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো।'

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, ট্রান্সশান হোল্ডিংসের চেয়ারম্যান জর্জ জু, চীন দূতাবাসের ইকোনমিক ও কমার্সিয়াল কাউন্সিলর সং ইয়াং বক্তৃতা করেন। বক্তারা ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির প্রশংসা করেন। তারা মোবাইল ডিভাইস শিল্পের বিকাশে সার্বিক সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

মানবকণ্ঠ/এফআই


poisha bazar