রমজানে কোরআন তেলাওয়াত

- অনলাইন ডেস্ক
- ২৪ মার্চ ২০২৩, ২১:১২, আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৩, ২১:১৭
কোরআন আল্লাহর বাণী, যা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়ে গ্রন্থাকারে লিপিবদ্ধ আছে এবং রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে সন্দেহাতীতভাবে ক্রমান্বয়ে ধারাবাহিকভাবে বর্ণিত হয়েছে। রমজান মাসে কোরআন অবতরণের সূত্রেই রমজান কোরআনের মাস হিসেবে বিবেচিত।
মানবজাতির হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তাআলার প্রেরিত সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোরআন মাজিদ রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছে। কোরআন অবতরণের সূত্র ধরেই রমজান মাস শ্রেষ্ঠ মাস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
রমজান মাসের কদরের রাতে নবী (সা.)-এর প্রতি কোরআন অবতরণের ধারাবাহিকতা শুরু হয়ে যা সুদীর্ঘ ২৩ বছরে পরিপূর্ণ হয়েছে। শুরুটা মহিমান্বিত কদরের রাতে হওয়ার কারণে আল্লাহ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে কদরের (রমজানের এক বিশেষ) রাতে আমি কোরআন অবতীর্ণ করেছি।’ (সুরা : কদর, আয়াত : ১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) রবিউল আউয়াল মাসের ৮ তারিখ মতান্তরে ১২ তারিখ (৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাস) সোমবারে জন্মগ্রহণ করেন। (সিরাতুল মুস্তফা, ১ম খণ্ড, পৃ. ৫১) রবিউল আউয়াল মাসে জন্ম হিসেবে ৪০ বছর পর রবিউল আউয়াল মাসেই নবী (সা.)-এর বয়স ৪০ বছর পূর্ণ হয়। তখন থেকে তিনি বিভিন্ন সত্য স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ক্রমান্বয়ে তাঁর কাছে একাকিত্ব আকর্ষণীয় হয়ে উঠলে তিনি হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতে শুরু করেন। মাঝেমধ্যে বাড়িতে এসে খাদ্য-পাথেয় নিয়ে যেতেন। এভাবে ছয় মাস অতিক্রম হওয়ার পর অর্থাৎ রবিউল আউয়াল মাসের পর (১) রবিউস সানি, (২) জুমাদাল উলা, (৩) জুমাদাল উখরা, (৪) রজব, (৫) শাবান, (৬) রমজান মাসে তাঁর প্রতি কোরআন অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয়। প্রথমে সুরা আলাকের শুরুতে পাঁচটি আয়াত অবতীর্ণ হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩; মুসলিম, হাদিস : ৪৪২)
রমজান মাসে কদরের রাতে আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদকে সেখান থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইজজাতে নিয়ে রেখেছেন। সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী ২৩ বছরে নবী (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা কদরের রাতে কোরআন মাজিদ পুরোটাই লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে বাইতুল ইজজাতে অবতীর্ণ করেছেন। অতঃপর প্রয়োজন অনুযায়ী ২৩ বছর ধরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। (ইবনে কাসির, ৮ম খণ্ড, পৃ. ৪৪১; তাফসিরে কুরতুবি, ২০তম খণ্ড, পৃ. ১২৯)
রমজানের পুরো মাসকে পবিত্র কোরআনের জন্য ওয়াক্ফ করে দিতেন। তাঁদের কেউ কেউ সাধ্যানুযায়ী অধিকবার কোরআন খতমের প্রতি মনোনিবেশ করতেন। এই পবিত্র মাসে মুসলমানদের কোরআন তেলওয়াত করতে হবে-
১. কোরআন পড়তে জানলে একাধিক খতম হওয়ার মতো বেশি করে তিলাওয়াতের অভ্যাস গড়ে তোলা।
২. সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন পড়তে না জানলে এই রমজানেই কোরআন শেখার দৃঢ়সংকল্প নিয়ে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা শুরু করা।
৩. কোরআন তিলাওয়াতের পাশাপাশি কোরআনের মর্মবাণী বোঝার জন্য তাফসির ও হাদিস অধ্যয়নসহ হক্কানি আলেমদের সাহচর্য লাভ করা।
৪. কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী সুন্নাহমাফিক আমল করে কোরআনের সঙ্গে সুমধুর সম্পর্ক গড়ে তোলা।
৫. তারাবির নামাজে কোরআন শুনে খতম করা।
মানবকণ্ঠ/এসএ


