বার্সেলোনার ‘হাইলাইন’ ডিফেন্সের ফাঁদে ধরা পড়ল এস্পানিওলও। জালে বল পাঠিয়েও দুইবার অফসাইডের জন্য গোল পেল না তারা। প্রথমার্ধে দারুণ ফুটবল উপহার দেওয়া বার্সেলোনা বিরতির পর কিছুটা ছন্দ হারালেও, পেল কাঙ্ক্ষিত জয়। শিরোপাধারী রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ব্যবধান বাড়াল আরও।
অলিম্পিক স্টেডিয়ামে রবিবার লা লিগার ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছে হান্সি ফ্লিকের দল। নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে জয়ে জোড়া গোল করেছেন দানি ওলমো, অন্যটি রাফিনিয়া। এস্পানিওলের হয়ে ব্যবধান কমিয়েছেন হাভি পুয়াদো।
স্পেনে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ম্যাচ। আগেই দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী সম্প্রচারের সময় একটু পর পর তাদের জন্য চাওয়া হয় সাহায্য।
অষ্টম মিনিটে প্রথম সুযোগ পায় বার্সেলোনা। সবার উঁচুতে লাফিয়ে নাগাল পেলেও হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ওলমো। দুই মিনিট পর ডি বক্সের বাইরে থেকে গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন তিনি।
তৃতীয়বারে সাফল্য পান ওলমো। দ্বাদশ মিনিটে লামিনে ইয়ামালের দুর্দান্ত ক্রস পেয়ে প্রথম স্পর্শে জাল খুঁজে নেন শুরুর একাদশে ফেরা এই ফরোয়ার্ড। এই গোলে অবদান রেখে ক্লাব সতীর্থ রাফিনিয়াকে (৬) ছাড়িয়ে আসরে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট এখন ইয়ামালের (৭)।
অষ্টাদশ মিনিটে একটুর জন্য সমতা ফেরাতে পারেনি এস্পানিওল। হাভি পুয়াদোর শট বেরিয়ে যায় কাছের পোস্ট ঘেঁষে। পাঁচ মিনিট পর সফরকারীদের একরাশ হতাশায় ডুবিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রাফিনিয়া। মাঝমাঠ থেকে মার্ক কাসাদোর বাড়ানো বল দৌড়ের মধ্যেই গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে জালে পাঠান এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।
আসরে এটি কাসাদোর তৃতীয় অ্যাসিস্ট, রাফিনিয়ার সপ্তম গোল। তার চেয়ে এগিয়ে আছেন কেবল ক্লাব সতীর্থ রবের্ত লেভানদোভস্কি। ২৭তম মিনিটে বার্সেলোনার জালে বল পাঠায় এস্পানিওল। তবে অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল।
চার মিনিট পর ব্যবধান আরও বাড়ান ওলমো। এস্পানিওলের ডি বক্সের কাছে রাফিনিয়া বল কেড়ে নিলে পেয়ে যান আলেহান্দ্রো বাল্দে। তার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে জাল খুঁজে নেন ওলমো। আসরে এটি তার পঞ্চম গোল। ৩৮তম মিনিটে লেভানদোভস্কির গতিময় বাঁকানো শট ব্যর্থ করে দিয়ে ব্যবধান আরও বাড়তে দেননি এস্পানিওল গোলরক্ষক।
দ্বিতীয়ার্ধে একই রকম শুরু করে বার্সেলোনা। রক্ষণে গুটিয়ে না গিয়ে গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায় এস্পানিওল। ৫৮তম মিনিটে জালে বলও পাঠায় তারা। তবে এবারও অফসাইডের জন্য মেলেনি গোল!
দুই মিনিট পর পুয়াদোর শট ঠেকিয়ে ব্যবধান কমতে দেননি বার্সেলোনা গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়া। লক্ষ্যে এটাই ছিল সফরকারীদের প্রথম শট।
বার্সেলোনাকে বেশ চাপে রাখা এস্পানিওল অবশেষে ভাঙতে পারে অফসাইড ফাঁদ। ৬৩তম মিনিটে খুব কাছ থেকে বল জালে পাঠিয়ে ব্যবধান কমান পুয়াদো। দুই মিনিট পর লেভানদোভস্কির জোরাল শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি এস্পানিওল গোলরক্ষক।
৭৩তম মিনিটে বার্সেলোনার জালে বল পাঠায় এস্পানিওল। তবে আক্রমণের এক পর্যায়ে বল লাইন অতিক্রম করায় মেলেনি গোল। ১১ মিনিট পর ডি বক্সের ভেতর থেকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ইয়ামাল।
৮৬তম মিনিটে হোফরে কারেরাস খুব কাছ থেকেও ঠিক মতো হেড করতে পারেননি, নষ্ট হয় এস্পানিওলের দারুণ সুযোগ। পরের মিনিটে তার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান পেনিয়া।যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে এস্পানিওলের জালে বল পাঠান আনসু ফাতি। তবে তিনি অফসাইডে থাকায় মেলেনি গোল।
১২ ম্যাচে টানা চতুর্থ ও সব মিলিয়ে ১১ জয়ে ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় বার্সেলোনা। আগের ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে হারা রেয়াল ২৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে দুই নম্বরে। শিরোপাধারীরা এক ম্যাচ কম খেলেছে। প্রবল বন্যার জন্য ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে তাদের ম্যাচ স্থগিত হয়ে গেছে। ১২ ম্যাচে অষ্টম হারের তেতো স্বাদ পাওয়া এস্পানিওল আছে ১৭ নম্বরে। তাদের পয়েন্ট ১০।
Comments