
আমাদের স্টিফেন হকিং 'মনসুর আহমেদ চৌধুরী'
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:১৪
সেলিম আউয়াল:: মনসুর হাত রাখলেন চাঁদের মাটিতে। গভীরভাবে অনুভব করলেন চাঁদের মাটি কেমন! তার দলের মধ্যে একমাত্র তিনিই চাঁদের মাটি স্পর্শ করার সুযোগ পেয়েছিলেন, বাকি কেউ এ সুযোগ পায়নি। কারণ মনসুর আহমেদ চৌধুরী ছিলেন দলের মধ্যে একমাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তারা গিয়েছিলেন আমেরিকার স্মিথ সোনিয়াম মিউজিয়ামে। ১৯৬৯-এ মানবজাতির পক্ষ থেকে চাঁদের বুকে পা রাখা নীল আর্মস্টংরা পৃথিবীতে এনেছিলেন চাঁদের মাটি। স্মিথ সোনিয়াম মিউজিয়ামের সেই মাটি শুধুমাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষকে ছুঁয়ে অনুভব করতে দেয়া হয়। এজন্যে মনসুর আহমেদ চৌধুরী চাঁদের মাটি ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন এবং এটি ছিল তার জীবনের উল্লেখ করার মতো একটি অসাধারণ স্মৃতি।
মনসুর আহমেদ চৌধুরী নিজেও একজন অসাধারণ মানুষ। মাত্র ছ’বছর বয়সে তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়ে যান, কিন্তু দৃষ্টি প্রতিবন্ধীত্ব তাঁকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি, জীবনের ঘোড়া টগবগিয়ে হাকাচ্ছেন, টেনে বেড়াচ্ছেন জীবনের তরী। প্রতিবন্ধীত্ব জয়ী হেলেন কেলার, স্টিভেন হকিংয়ের নামের পাশে আজ অনায়াসে বসানো যায় তাঁর নাম।
দেড়’শ বছরের পুরনো ঢাকা কলেজের (প্রতিষ্ঠা-১৮৪১) প্রথম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসেও তিনিই প্রথম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র। আরো দশজন ছাত্রের মতো তিন ঘন্টা সময় নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হিসেবে পরীক্ষার জন্য বাড়তি কোন সময় তাকে দেয়া হয়নি। কিন্তু প্রতিবন্ধী মনসুর, প্রতিবন্ধকতা ভেঙে সেই ১৯৬৬ সালে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসিতে মানবিকে প্রথম বিভাগ পেয়েছিলেন। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে এইচএসসি-তেও প্রথম বিভাগ পেয়েছিলেন। সে বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ড থেকে মাত্র ৮০ জন প্রথম বিভাগ পেয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে এম এ (লোক প্রশাসন) তে দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন প্রত্যয়ী মনসুর। সে বছর প্রথম শ্রেণি পেয়েছিলেন মাত্র দু’জন। জীবনের বিভিন্ন স্তরে তিনি পেয়েছেন স্কলারশিপ তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর কোটায় নয়, মেধার কোটায়।
একজন স্মার্ট রোমান্টিক মানুষ
কালো চশমা চোখে, কোর্ট-টাই পরা মনসুর যখন একটি শাদা স্টিক হাতে হেঁটে যান, মনেই হবে না একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষ হেঁটে যাচ্ছেন। বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, হিন্দি ভাষায় কথা বলেন, ভরাট কণ্ঠে স্পষ্ট উচ্চারণে। ক্লাবে যেতে ভালোবাসেন, ভালোবাসেন আড্ডা দিতে, নিজের কাজগুলোও করেন সিরিয়াসলি। কথা বললে বুঝা যায় একজন স্মার্ট, রোমান্টিক, অনুভ‚তিপ্রবণ মানুষ তিনি। কবিতা ভালোবাসেন দারুন। আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, কবি শামসুর রাহমানের কবিতা ব্রেইলে মুদ্রিত করে নিয়েছিলেন। অবসর সময়ে সে সব কবিতা পাঠ করেন। এ জন্যেই তাকে যদি বলি আজ আকাশটা গভীর নীল অথবা গাছপালা ভীষণ সবুজ অথবা দূরের পাহাড়গুলো দারুন সুন্দর সত্যি সত্যি তার মুখাবয়বে সেই আকাশ গাছগাছালি পাহাড় দেখার সুখ ছবি ফুটে উঠে। অবশ্য একদিন মনসুর আহমেদ চৌধুরীও আকাশ দেখতেন, দেখতেন পৃথিবীটা। সময়টা ছিলো খুব কম-মাত্র ছ’বছর।
বল খেলতে গিয়ে অন্ধ
মনসুর আহমেদ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ভাদেশ্বর গ্রামে। জন্ম ১৫ নভেম্বর ১৯৪৯, হবিগঞ্জ জেলা শহরে, বাবার কর্মক্ষেত্রে। বাবার চাকরির সুবাদে তাদেরকে ঘুরে বেড়াতে হতো নানান জায়গায়। তারা তখন ঢাকার নারিন্দার ১৪ নম্বর শরৎ গুপ্ত রোডের বাসায় থাকতেন। টেনিস বল নিয়ে খেলছিলেন। বল ছুঁড়ছিলেন দেয়াল থেকে আবার ফিরে আসছিলো নিজের কাছে। হঠাৎ একবার দেয়াল থেকে ফিরে আসা বলটি তার হাতে না পড়ে পড়লো একদম চোখের উপর। বা চোখের লেন্সটা নাড়িয়ে দিলো এই অপয়া বল। চোখে প্রচন্ড যন্ত্রণা। বা চোখে পানি ঝরে। মা-বাবা নিয়ে গেলেন ঢাকার সে সময়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে। বেশ ক’জন চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ তাঁকে দেখলেন। কোন কাজ হলো না। ডাক্তাররা ঠিক করলেন চোখের লেন্সকে তার নিজের জায়গায় বসিয়ে দেবার জন্য চোখে অপারেশন করবেন। ১৯৫৫ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে তার চোখে বল পড়েছিলো। এর ৬ মাস পর মনসুরের চোখে অপারেশন হয়। কিন্তু লোকে যা বলে জানি না সত্যি কি না, ‘কপালে সবার নাকি সুখ সয় না’ তারও হলো তাই। বা ‘চোখ তো ভালোই হলো না। ডান চোখে দেখতেন, অপারেশনের ৩ দিনের মাথায় সেই ডান চোখটাও অন্ধ হয়ে গেলো। এইভাবে একটি চটপটে আমুদে শিশু পরিণত হলো একজন অন্ধ মানুষে। ভীষণ কষ্ট, চারপাশে শুধু ঘুটঘুটে কালো আঁধার, চোখের সামনে যেন কে মেলে ধরেছে কালো পর্দা।
আলো আমার আলো ওগো...
জীবনের তরী হয়তো থেমে যেতো। কিন্তু শিক্ষিত মা বাবা, পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা এবং মনসুর আহমেদ চৌধুরীর অদম্য মনোবল, শুরু হলো অন্ধত্বের আঁধার তাড়াবার সংগ্রাম। তার যখন অন্ধত্বের সূচনা, তিনি তখন ঢাকার বাংলাবাজার কিন্ডার গার্টেনের ক্লাস ওয়ানের ছাত্র। অপারেশন করতে-টরতে কেটে গেলো অনেক সময়। অন্য অনেকের হলে হয়তো আটকে যেতো পড়াশুনা, কিন্তু মনসুর তো দমে যাবার পাত্র নন। বাবার এক বন্ধু রোটারিয়ান সৈয়দ এহসান কবির তাকে ভর্তি করে নিলেন রোটারি ক্লাবের নতুন শুরু হওয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের স্কুলে। স্কুলটি ছিল ঢাকার ওয়ারির ১৭/৮ র্যাংকিন স্ট্রিটে। ১৯৫৭ সালের ১৫ই মার্চ সে সময়ের মূখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান স্কুলটি উদ্বোধন করেছিলেন। ২রা এপ্রিল থেকে ক্লাস শুরু করেন মনসুর এবং এখানেও তিনি ছিলেন প্রথম ছাত্র। ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়তেন। মেট্রিক পরীক্ষা কিন্তু ব্রেইল পদ্ধতিতে দেননি। স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীদের মতো তিনি পরীক্ষা দিলেন। তবে একটু ব্যতিক্রম আছে, তিনি প্রশ্নের উত্তর বলে যেতেন এবং বোর্ডের নিয়োগ দেয়া একজন শ্রুতি লেখক তা লিখতেন। সেই শ্রুতিলেখক ছিলেন তাঁর ফুফাতো ভাই ইমরান হোসেন চৌধুরী (বাবলা)।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধত্বের জন্য ভিসা পেলেন না
মালয়েশিয়া, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলংকা, যুগোশ্লোভিয়া, বেলজিয়াম, সুইডেন, ইন্দোনেশিয়া, সিংগাপুর, বাহরাইন, সৌদিআরব, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, কানাডা, জার্মানী, স্পেন, পাকিস্তান, ফিজি, হংকং, সুইজারল্যান্ড, চীন-পৃথিবীর একদেশ থেকে আরেক দেশে আজ ছুটে বেড়ান ব্যস্ত মনসুর চৌধুরী, প্রশিক্ষণ, সেমিনার-কর্মশালায় যোগ দিতে। ১৫/২০ বার গিয়েছেন ইংল্যান্ড। পৃথিবীর ৪৮ দেশ এর মধ্যে তার দেখা হয়ে গেছে। কিন্তু একদিন তাকেই ভিসা দেয়া হয়নি ইংল্যান্ড পড়তে যাবার জন্য। ছাত্রজীবনের পাট চুকিয়ে মনসুর চেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে, তিনি আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু তাকে বলা হলো একজন রাজনৈতিক নেতার সুপারিশ নিয়ে আসতে। যিনি ছিলেন কলেজ জীবনে তার চেয়ে এক বছরের জুনিয়র। ভাবলেন ‘জীবনতরী’ যখন এতোটুকু টেনে এনেছেন কারো তদবির ছাড়া, তাহলে কি প্রয়োজন আর তদবিরের? সিদ্ধান্ত নিলেন ব্যরিস্টারি পড়তে ইংল্যান্ডে যাবেন। লন্ডনের ইনার টেম্পল ইনে ভর্তি প্রক্রিয়াও সেরে ফেললেন। কিন্তু ব্রিটিশ ভিসা অফিসার তাঁকে ভিসা দিলেন না, কারণ তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, একাকী সেখানে চলবেন কিভাবে। জীবনের তরী ধাক্কা খেলো, ভেঙে গেলো মন। সাহসী সহযাত্রীর মতো পাশে দাঁড়ালেন বাবা মজির উদ্দিন চৌধুরী। ছেলেকে সাহস যোগালেন- তুমি লেখাপড়া শিখেছো, এটাই আমার কাছে বড়ো পাওয়া। খাওয়া পরার চিন্তা নেই তাই মন খারাপ করো না। জীবন তরী উজানে ঠেলতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন মনসুর চৌধুরী। ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন ফোরামে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্যে কথা বলতে শুরু করেছেন তিনি। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে দেরশবিদেশের নানা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেছেন তিনি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনার, কর্মশালায় তিনি নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। এইসব নানা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় বিশ্বখ্যাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিত্ব প্রয়াত স্যার জন উইলসন, সিবিই, ডিসিএলের সাথে। স্যার জন তাকে উৎসাহ যোগালেন। ১৯৭৭ এ স্যার জন আবার এলেন ঢাকায়, তখন তিনি রয়েল কমনওয়েলথ সোসাইটি ফর ব্লাইন্ডের প্রধান ব্যক্তিত্ব। তারই উৎসাহে ১৯৭৮ সনের ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ন্যাশনাল সোসাইটি ফর ব্লাইন্ড (বিএনএসবি) ঢাকার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মনসুর যোগ দেন। শুরু হয় তার পেশাগত জীবন। ১৯৮০ পর্যন্ত নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।এরপর দশটি বছর (১৯৮১-৯১) কাটিয়ে দেন এসিসট্যান্স ফর ব্লাইন্ড চিলড্রেন (এবিসি) ঢাকার জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে। সেপ্টেম্বর ১৯৯২-নভেম্বর ১৯৯৩ পর্যন্ত ছিলেন টেকনিক্যাল এডভাইজার, হেলেনকেলার ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ।১৯৯৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখনো ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালনকরছেন। এছাড়াও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন- চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর ডিসএবিলিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (সিডিডি), চেয়ারম্যান, প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন ও নীতিমালা বিষয়ক কমিটি, জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম, চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর সার্ভিসেস এন্ড ইনফরমেশন অন ডিসএবিলিটি, সেক্রেটারী, সোশ্যাল সার্ভিসেস এন্ড ম্যানেজমেন্ট ট্রাস্ট।
জীবন বাঁকে ২ এপ্রিল
মনসুর আহমেদ চৌধুরীর জীবনে ‘২ এপ্রিল’ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৫৭ সালের ২ এপ্রিল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হিসেবে তিনি লেখাপড়া শুরু করেছিলেন। আবার ১৯৭৮ সালের ২ এপ্রিল এসিসট্যান্ট ফর বøাইন্ড চিলড্রেন (এবিসি) এর প্রতিষ্ঠা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনিও ছিলেন একজন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৯ সালের ২ এপ্রিল ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’ বুড়িগঙ্গা নদীর বুক থেকে প্রথম প্রকল্প স্থানের দিকে যাত্রা শুরু করেছিলো। এখনো এই ‘জীবন তরী’ ভাসমান হাসপাতালটি অসংখ্য মানুষকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করে আসছে।
দশ বছরের দাম্পত্য জীবন
মনসুর আহমেদ চৌধুরীর দাম্পত্য জীবন দশ বছরের। ১৯৮৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন জেসমিন রহমানকে। স্নাতক ডিগ্রিধারী জেসমিন রহমান ছিলেন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ। তিনি যেন ছিলেন মনসুর চৌধুরীর হারিয়ে যাওয়া চোখ। মাসের প্রথমে বেতনের পুরো টাকা তুলে দিতেন তার হাতে। তারপর সবকিছু সামলাতেন জেসমিন। বাজার থেকে শুরু করে সৌখিন মানুষ মনসুরের প্রিয় পোশাক-আশাক সব কিনতেন তিনি। দু’জন ঘুরে বেড়াতেন দেশে বিদেশে। কিন্তু ‘সুখের নিশি প্রভাত হইয়া যায়’ বড় দ্রুত। দাম্পত্য জীবনের দশ বছরের মাথায় জেসমিন হারিয়ে যান মনসুরের জীবন থেকে। দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ১৯৯৫ সালের ২৫ মার্চ ৪১ বছর বয়সে জেসমিন রহমান ইন্তেকাল করেন। তাদের একমাত্র ছেলে জাহিদ আহমেদ চৌধুরী বিপুল এখন ঝলক ফাউন্ডেশন নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। মনসুর আহমেদ চৌধুরীর পিতা মজির উদ্দিন চৌধুরী এবং মাতা আছিয়া খাতুন চৌধুরী। দু’জনেই পৃথিবীতে নেই। বাবা মজির উদ্দিন চৌধুরী ১৯৬৭ সালে নৌ-দুর্ঘটনা বিষয়ক বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন, মারা যান ১৯৮৬ তে এবং মাতা আছিয়া খাতুন চৌধুরী ছিলেন গৃহবধু, তিনি মারা যান ১৯৭৯-তে। চার ভাই, এক বোনের মধ্যে মনসুর চৌধুরী তৃতীয়। সবার বড়ো বোন জাহানারা ছোটবেলাতেই মারা যান। সবার বড়ো ভাই মুশতাক আহমেদ চৌধুরী মারা গেছেন ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডে। মেঝভাই নিয়াজ আহমেদ চৌধুরী অ্যাপেক্স ফার্মা লিমিটেডের পরিচালক। সবার ছোট মনজুর আহমেদ চৌধুরী ১৯৮৭ তে মারা যান।
জীবন তরীর সিন্দাবাদ
মনসুর আহমেদ চৌধুরী এখন একজন আন্তর্জাতিক মানুষ। বিভিন্ন সম্মেলন কর্মশালা প্রশিক্ষণে যোগ দিতে তিনি ঘুরে বেড়ান দেশ থেকে দেশে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে তিনি উপস্থাপন করেছেন নিজের লেখা। এ পর্যন্ত তার মোট প্রকাশনা ১৩টি। তাঁর লেখা সবশেষের বইটি হচ্ছে, আত্মজীবনী ‘আপন আলোয় দেখা ভুবন’।এই গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে সময় প্রকাশনী। বাংলাদেশ দেশের প্রতিবন্ধী মানুষকে এগিয়ে নিতে, সাহস যোগাতে, তাদের জীবন তরীকে এগিয়ে নিতে তিনি এক সাহসী মাঝি সিন্দাবাদ।
লেখক: সাবেক বার্তা সম্পাদক, দৈনিক সিলেটের ডাক, সাবেক প্রতিনিধি: বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস),
সাবেক সহসভাপতি: কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ [প্রতিষ্ঠা: ১৯৩৬], সিলেট