manobkantha
রায়ে নির্ভর করছে এনআরসি’র ভবিষ্যৎ

নাগরিকত্ব আইনের ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা, পেছাল শুনানি

রায়ে নির্ভর করছে এনআরসি’র ভবিষ্যৎ

ভারতে বিদেশি শনাক্তকরণে ‘কাট অব ইয়ার’ ১৯৭১ সাল বহাল থাকবে, না ১৯৫১ সাল হতে হবে তা নিয়ে আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি ছিল। কিন্তু মুখ্য বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ সেটাকে আগামী বছরের ১০ জানুয়ারি অবধি পিছিয়ে দিয়েছে।

এর আগে এই মামলায় প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীরা দেশের অ্যাডভোকেট জেনারেলের (এজি) সঙ্গে বৈঠক করে সাংবিধানিক বেঞ্চের জন্য বিবেচ্য বিষয়কে পৃথক করবেন এবং অন্য বিষয়গুলোকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে পাঠানোর সুপারিশ করবেন। বেঞ্চে বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি, এমআর শাহ, হিমা কোহলি এবং পিএস নরসিমা রয়েছেন।

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬ (এ) এবং আরও কিছু সন্নিবিষ্ট ধারার প্রতিবাদ করে আসাম সম্মিলিত মহাসংঘ, আসাম পাব্লিক ওয়ার্কস, ইন্ডিয়ান মুসলিম লীগসহ একাধিক দল ও সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল। বছর তিনেক ধরে মামলাটি ঝুলে রয়েছে।

ঘটনা হচ্ছে, সুপ্রিমকোর্ট যদি বিদেশি শনাক্তকরণের ভিত্তিবর্ষ ১৯৫১ সাল হতে হবে বলে মত দেয় তাহলে আলোড়ন সৃষ্টিকারী রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জী নবায়ন (এনআরসি) প্রক্রিয়া অসাড় হয়ে যাবে।

ভারতের চলমান নাগরিকত্ব আইন মতে, ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের মধ্যরাতের আগে যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন তারা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য। আসামে আশির দশকে বিদেশি বিতাড়নের ছয় বছর ব্যাপি আন্দোলনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর উদ্যোগে সারা আসাম ছাত্র সংস্থা (আসু) এবং রাজ্য সরকারকে নিয়ে ১৯৮৫ সালে একটি ত্রি-পাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তিতে নাগরিকত্বের ভিত্তিবর্ষ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ মধ্যরাত্রি করা হয়। পরে কেন্দ্র সরকার নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী এনে তা পরিবর্তন করে। সুপ্রিম কোর্টে এই ব্যবস্থাকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

উল্লেখ করতে হচ্ছে যে, বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে যারা আসামে প্রবেশ করে বসবাস করছেন, তাদের চিহ্নিত করতেই এনআরসি নবায়নে হাত দেয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রে ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার এই প্রক্রিয়ায় ধর্মীয় বিভাজন চায়। তারা বলছে, বাংলাদেশ থেকে যেসব হিন্দু ভারতে প্রবেশ করছেন তারা ‘শরণার্থী’ এবং মুসলিমরা হচ্ছেন ‘অনুপ্রবেশকারী’। যদিও আসামের আসুসহ অন্য দল ও সংগঠনের ভাষ্য হচ্ছে যে বিদেশি বিতাড়ন করতে হবে ভিত্তিবর্ষের নিরিখে। ধর্মের ভিত্তিতে নয়।

মানবকণ্ঠ/এমআই