মুন্সীগঞ্জের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ইলিশের ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা মিলছে না। ফলে আড়ত ও বাজারে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া, জেলেদের মাঝে হতাশা। ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে ১ কেজি ইলিশ ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রামের ইলিশ ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ ১ হজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জের হাট বাজারগুলো ঘুরে এ চিত্রই দেখা গেছে। 

ঢাকার বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা নদীর দূষিত পানি মেঘনার মোহনা পর্যন্ত পৌঁছেছে। গজারিয়া উপজেলায় শিল্পকারখানার বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে, যা দূষণ বাড়াচ্ছে। এছাড়া পদ্মায় বালুবাহী বাল্কহেডের ধোঁয়া, ইঞ্জিনের তেল ও শব্দদূষণ ইলিশের আগমন কমিয়ে দিয়েছে। নদীর নাব্যতা সংকট ও অবৈধ কারেন্ট জালের ব্যবহারও ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র কমাচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জ মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, গবেষণা বলছে বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষা নদীর দূষণটা নদীর নীচ দিকে নেমে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। দূষণের কারণে সাগর হতে ইলিশ মাছ নদীতে উঠে আসছে না। তাছাড়া নদীতে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে প্রতিনিয়তই দূষণ বাড়ছে যার কারণে মেঘনা পদ্মা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না।

ইলিশের ভরা মৌসুম চললেও কিন্তু জালে ধরা না পড়ায় নিরাশ জেলেরা। জেলেদের দাবি পদ্মা নদীর গভীরতা কমেছে, পদ্মা নদী দিয়ে অবাধে বালুবাহী বাল্কহেড চলছে ও পদ্মা নদীর মুখ ভাষানচরে নাব্যতা সংকটের কারণেই ইলিশ  পদ্মা, মেঘনায় আসতে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। তবে মৎস্য কর্মকর্তারা বলছে নদী দূষণ, প্রতিকূল আবহাওয়া, নদীর আয়াতন বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা নদীতে জাল ফেলতে না পাড়ায় মাছ পাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে জেলে জাকির হালদার বলেন, এ বছর মুন্সীগঞ্জ এলাকার পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ একেবারে পাওয়া যাচ্ছেনা। শরিয়তপুর সুরেশ্বর এলাকায় কিছু ইলিশ মাছ পাওয়া যায় কিন্তু মুন্সীগঞ্জের নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়াই যাচ্ছেনা। 

অপর জেলে দুলাল মোল্লা বলেন, ইলিশ মাছ নদীতে নাই বললেই চলে। সারাদিন জাল ফেলেও ইলিশ মাছের দেখা পাইনা। 

এ ব্যাপারে দিঘির পার মাছ আড়ৎতের আড়তদার মিজান খান বলেন, এ বছর আমাদের দিঘিরপাড় আড়তে ইলিশ মাছ উঠেনা বললেই চলে। এমোন পরিস্থিতি কখনোই সৃষ্টি হয়নাই। 

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেল সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসরিন জাহান বলেন, নদী দূষণের কারণেই নদীতে ভরা মৌসুমেও মিলছে ইলিশ। নদী দূষণ হওয়ার কারণেই মূলত ইলিশ সাগর হতে নদীতে উঠে আসছেনা।