Image description

দেশে ক্রমবর্ধমান 'মব সন্ত্রাস' নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের মুখপাত্র জোনায়েদ সাকি। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, কেবল বিবৃতি দিয়ে এই দায় এড়ানো যাবে না। মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাজধানীর হাতিরপুলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা এবং দলের সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, "অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা গভীর পরিতাপ ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে দেশে এক ধরনের মব তৈরি করে হামলা, অবমাননা, নির্যাতনের সংস্কৃতি চালু হচ্ছে, এটা অত্যন্ত বিপদজনক।" 

তিনি উল্লেখ করেন, এর আগে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ, মাজারে আক্রমণ, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উপর আক্রমণ এবং বিভিন্ন ব্যক্তির উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। সাকি অভিযোগ করেন, অভ্যুত্থানের দশ মাস পেরিয়ে গেলেও এসব ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কার্যকর ভূমিকায় দেখা যায়নি; বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের উপস্থিতি থাকলেও নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে। তিনি সরকারের এবং আইন-শৃঙ্খলা কাজে নিয়োজিত সকল বাহিনীর কার্যকর ভূমিকা দেখতে চেয়েছেন, এবং বলেছেন "শুধু বিবৃতি দিয়ে দায় সারলে চলবে না, অবশ্যই উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।"

সম্প্রতি ২০১৮ সালের নৈশ নির্বাচনের হোতা নুরুল হুদাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে জুতা দিয়ে পেটানো বা জুতার মালা পরানোর ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেন জোনায়েদ সাকি।

তিনি বলেন, "বাংলাদেশে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের প্রহসনের নির্বাচনের পেছনে যারা ছিলেন তাদের প্রত্যেকেরই এসব নির্বাচনের ও গণতন্ত্র ধ্বংসের দায় আছে এবং তাদের সকলকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।" 

তবে, তিনি সতর্ক করে দেন যে, "বিচারের আগেই তাদের মব সৃষ্টি করে হেনস্থা করার মাধ্যমে অপরাধীর অমানবিকীকরণের যে উদাহরণ সৃষ্টি হচ্ছে তা মোটেই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কোনো দৃষ্টান্ত নয়।"

জোনায়েদ সাকি অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান এবং সরকারকে অবিলম্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান যাতে বিচারের নামে কোনো প্রহসন কিংবা মব বিচার চলতে না পারে।

সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি গতকাল জাতীয় নাগরিক পার্টির অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

তিনি সতর্ক করেন যে, সুষ্ঠু তদন্ত না হলে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় না আনা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটার আরও সুযোগ তৈরি হবে। সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক কুমার রায়, কেন্দ্রীয় সদস্য আলিফ দেওয়ান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা বাবন, জাতীয় পরিষদ সদস্য পপী রানী সরকার, তৌহিদুর রহমানসহ অন্যান্য আঞ্চলিক নেতৃবৃন্দ।