Image description

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনীতিতে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বাড়ছে। রাজনীতি মূলত রাষ্ট্রের কল্যাণে। দেশ জনগণ রাষ্ট্রের জন্য রাজনীতি। রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজনৈতিক দল ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতি থাকা চাই। বাংলাদেশের রাজনীতি নির্বাচনের আগে পরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত দলগুলো রাজনীতির মাঠে সরব হয়ে ওঠে নির্বাচনকে ঘিরে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সরকার পরিবর্তন হয় ভোটের মাধ্যমে।

সাংবিধানিকভাবে পাঁচ বছর পর পর সকল নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা আছে। সেই কারণে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য কর্মসূচি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক নিয়মে বাংলাদেশের সব নির্বাচন করার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে থাকে। তারা স্থানীয় জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলসমূহকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান। রাজনৈতিক দলগুলোরও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা আছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণের মতামত নিয়ে সরকারের কর্মকাণ্ডে শরিক হওয়া। রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের সময়ের জন্য অপেক্ষায় থাকে। কর্মী থেকে নেতা পর্যন্ত সকলের মধ্যেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গিয়ে জনগণের সেবা করার একটি চিন্তা কাজ করে। সেই লক্ষ্যেই রাজনৈতিক দলের সৃষ্টি ও কর্মপন্থা। মূলত রাজনীতির উদ্দেশ্য হলো দেশ জনগণ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ করা। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিলে সেই দলের অস্তিত্ব জনগণের নিকট তেমন গুরুত্ব থাকে না। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের দাবি দাওয়া আদায় ও পূরণ করা রাজনৈতিক দলগুলোর অন্যতম উদ্দেশ্য।

দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার অন্ন বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা প্রগতি উন্নতি সার্বিক সফলতার জন্য রাজনীতি ও দলের প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে দল গঠিত হয়। দেশপ্রেম ভালোবাসা দেশের স্বার্থ নাগরিক অধিকার যেকোনো রাজনৈতিক দলের অন্যতম চরিত্র। বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি বিষয় স্বাধীনতার পর হতে অদ্যাবধি একটি বিষয় জনগণ লক্ষ্য করছে যে, জাতীয় নির্বাচন আসলে বৃহৎ দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখতে পাওয়া যায়। তারা জনগণ ও দেশের স্বার্থের চেয়ে দল ও ব্যক্তি স্বার্থকে বেশি প্রাধান্য দেয়। ক্ষমতার নিয়মাতান্ত্রিক পরিবর্তন সহজেই গ্রহণ করতে চায় না। জনগণের ভোট ও মতামতকে গুরুত্বে আনতে চায় না। কতিপয় রাজনৈতিক দল ও নেতা ক্ষমতার সর্বোচ্চ চেয়ার দখল করার জন্য যেনো কোনো পন্থায় নীলনকশা ও ষড়যন্ত্রের পন্থা খুঁজতে থাকে। দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের সাথে হাত মিলায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। শহীদের তাজা রক্তের গন্ধ এখনো সুখায়নি। ত্রিশ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম ইজ্জত বিলীন করতে হয়েছে স্বাধীন এই মানচিত্র অর্জনের জন্য। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাবিরোধী ষড়যন্ত্র চক্রান্ত এখনো অব্যাহত আছে।

দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতাবিরোধী মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা জনগণ দেখছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে কোনোভাবেই সুশৃঙ্খলভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী অর্জন আজ অনেক কিছু জাতি পেয়েছে? এতদিনে বাংলাদেশ আজকের দিনে উন্নতি অগ্রগতি শিক্ষা সংস্কৃতি ও অর্থনীতিতে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। শহর ও গ্রাম এখন উন্নয়নে একাকার হয়ে গেছে। শিক্ষার হার ক্রমেই বাড়ছে। স্বাস্থ্য সেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। বয়স্ক ভাতা মুক্তি যোদ্ধার সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন আয় বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। বেকারত্ব ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসছে। শিক্ষা দীক্ষা তথ্য প্রযুক্তি শহর থেকে গাঁ গ্রাম পর্যন্ত হাতের নাগালে। রাষ্ট্র পরিচালনায় যে সরকার ও দল রয়েছে ব্যাপকভাবে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের অর্থনৈতিক সফলতা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।

এর পরেও রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। যারাই স্বাধীনতার সময় আমার মাতৃভূমির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল আজকের প্রেক্ষাপটে তারাই বাংলাদেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন, মানবাধিকার নিয়ে তথাকথিত দরদ দেখাচ্ছে। বাস্তবে এটি দেশ ও জনগণের জন্য দরদ নয়। একটি ষড়যন্ত্র ও গভীর ষড়যন্ত্র। বাংলাদেশের নির্বাচন ভোট রাজনীতি সরকার কীভাবে হবে সেটি নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। ভোট ও নির্বাচন এদেশের সাংবিধানিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই সমাপ্ত করবে। সাংবিধানিকভাবে সেটি নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। দেশি বিদেশি অবৈধভাবে কোনো পক্ষ দেশের রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে অযাচিতভাবে নাক গলাক সেটি স্বাধীন দেশের জনগণ মোটেও ভালো চোখে দেখে না। দেখার কথাও না। জনগণ যাদেরকে ভোটের মাধ্যমে মতামত প্রদান করবে তারাই রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব গ্রহণ করবে।

ভোট জনগণের আমানত, সাংবিধানিকভাবে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আমার ভোট আমি দেব যাকে খুশি তাকে দেব। কোনো ধরনের শক্তি অর্থাৎ চাপ প্রয়োগ করা চলবে না। সেই ভাবে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্নভাবে ভোটাধিকার গ্রহণ করতে চায় জনগণ। তবে সেই জায়গায় যেনো কোনো ধরনের জাতীয় আন্তর্জাতিক চাপ না থাকে। নির্বাচন কমিশন পরিচ্ছন্নভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবে। কারো প্ররোচনায় যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে। যথা সময়ে নির্বাচন সঠিক সময়ে ক্ষমতার পালাবদল শান্তিপূর্ণ রক্তপাতহীন পরিবেশে জনগণ নির্বাচন চায়।
এর বাইরে দেশের জনগণ অন্য যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের জালে পা দেবে না। অযৌক্তিক হরতাল অবরোধ, ধর্মঘট, জ্বালাও পোড়াও, জনগণের জীবন জীবিকার রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলনের নামে যেকোনো কর্মসূচি জনগণের সমর্থনযোগ্য নয়। মাতৃভূমি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি উন্নয়নে জাতি আশাবাদী। যারাই জনগণের উন্নয়ন অগ্রগতি ও নিরাপত্তা শান্তির প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে জনগণ তাদের সাথেই থাকবে।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট