
আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির নামে মানুষকে লাঠিপেটা করা, চক্রাকারে দৌড়ানো, গাছের পাতা খাওয়ানো, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে মূত্রপানে বাধ্য করতো স্বঘোষিত 'বাবা' সঞ্জয় পাগারে। মানুষের অসহায়ত্ব এবং অন্ধবিশ্বাসের সুযোগে প্রায় দুই বছর ধরে চলেছে তার এসব নির্মম কর্মকাণ্ড। কর্তৃপক্ষের কাছে থাকা কিছু ভিডিও ফুটেজ যাচাই করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
ভারতের মহারাষ্ট্র অঙ্গরাজ্যের ভাইজাপুরের তেশিল শহরের শিউর গ্রামের একটি উপাসনালয়কে নিজের কর্মস্থল বানিয়েছিল পাগারে। নিজেকে অলৌকিক শক্তির অধিকারী দাবি করে সে ভূত তাড়ানো থেকে শুরু করে অবিবাহিতদের বিয়ে এবং নিঃসন্তানদের জন্য সন্তানলাভের তথাকথিত 'অঘোরী' আচারানুষ্ঠান সম্পাদন করতো।
তার এসব নির্মম আচার অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে প্রমাণ সংগ্রহের জন্য ছদ্মবেশী অভিযানের (স্টিং অপারেশন) আয়োজন করে স্থানীয় একটি কুসংস্কারবিরোধী সংগঠন। তাদের লুকানো ক্যামেরায় যেসব ফুটেজ এনডিটিভি যাচাই করেছে, তা অনেক ক্ষেত্রে বিবমিষার উদ্রেক করে।
ভিডিওর শেষে দেখা যায়, লোকটি অন্যদের সহায়তায় উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। তার নিজের ওপর খুব বেশি নিয়ন্ত্রণ ছিল বলে মনে হচ্ছিল না।
অন্যান্য ভিডিওতে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে নির্মমভাবে লাঠিপেটা করছে পাগারে। তার ভাষায় এটা হচ্ছে আত্মিক পরিশুদ্ধির অংশ, যা তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসা সবার জন্য ছিল প্রায় বাধ্যতামূলক দাওয়াই।
ভিডিও ধারণকারী মানবাধিকার কর্মীরা পাগারের বিরুদ্ধে ভারতীয় পেনাল কোডের অধীনে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণা, লাঞ্ছনা এবং কুসংস্কার প্রচারের দায়ে সঞ্জয় পাগারের বিরুদ্ধে এফআইআর ফাইল করেছে কর্তৃপক্ষ।
ভবিষ্যতে এমন নৃশংসতার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মহারাষ্ট্র কুসংস্কার ও কালোজাদুবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি তুলেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
Comments