Image description

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে দাম বেড়েছিল ব্রয়লার মুরগির। সেই শুরু; আশুরা শেষ হলেও কমেনি মুরগির দাম। উল্টো বেড়েই চলেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে সামনের কয়েকদিনে দাম আরও বাড়তে পারে। তবে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রশাসনের কোন তদারকি নেই। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ানো শুরু করেছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বহদ্দারহাট ও দুই নম্বর গেটের কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি আগের চেয়ে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। এতদিন সোনালি মুরগির দাম না বাড়লেও এবার সেটিও বেড়েছে প্রতিকেজিতে ১০ টাকার বেশি। এখন সোনালি মুরগি বিক্রি করা হচ্ছে ৩২০-৩০ টাকায়।

জানতে চাইলে কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের ইফাজ ইফরান পোল্ট্রি ফার্মের প্রোপাইটর মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ব্রয়লার মুরগি আমাদের এখন ১৪৫-১৪৭ টাকায় কিনতে হচ্ছে। যা আগে ১৩৫-১৪০ টাকা কেনা পড়তো। সেজন্য এখন প্রতিকেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যদিকে, সোনালি মুরগি কিনতে হচ্ছে ৩১০ টাকায়। সেজন্য এই মুরগি ৩২০ টাকায় বিক্রি করছি।

দাম বাড়ার বিষয়ে মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, খামারিরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে বেশি দামে বিক্রিও করতে হচ্ছে। সামনে নাকি আরও দাম বাড়তে পারে।

সবজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে পানি জমে সবজি ও কাঁচা মরিচের ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যার কারণেও নষ্ট হয়েছে সবজি। গত ৮-১০ দিন থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলো থেকে সবজি কম আসছে। এতে বাজারে সরবরাহ কমে সবজির দাম বেড়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে।

পেঁয়াজ ৫৫-৬০, রসুন ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েক রকম সবজির দাম কিছুটা কমেছে, আবার কিছুর দাম বেড়েছে। টমেটো ১২০-১৪০, কাঁকরল ১১০-১২০, কাঁচা মরিচ ২শ-২৪০, গাজর ১৫০-১৮০, ঝিঙা ১শ-১১০, তিতা করলা ১শ, বেগুন ৮০-১শ, কচুরমুখি ১শ, ধনে পাতা ২শ-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বরবটি ৭০-৮০, পটল ৫০-৬০, ঢেঁড়স ৭০-৮০, চিচিঙ্গা ৬০-৭০, কচুর লতি ৫০-৬০, শসা ৭০-৮০, মিষ্টিকুমড়া ৪০-৪৫, পেঁপে ৬০, লাউ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাক প্রতি আঁটি ৩০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে দেশি মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় স্থিতিশীল রয়েছে এজাতীয় মাছের দাম। তেলাপিয়া ১৮০-২২০ টাকা, রুই ২৫০-৩৮০, কাতলা ২৫০-৪শ, মৃগেল ২শ-২৫০, পাঙ্গাস ২শ-২২০, মাগুর ও শিং ৪৫০-৬৫০ এবং দেশি কই ৩৫০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় লইট্যা বিক্রি হচ্ছে ২শ-২৫০ টাকায়। এছাড়া মলা ৫শ, বাইল্যা ৪শ-৫৫০, রিকশা ৪৫০-৬শ, পাবদা ৩৫০-৪শ, কোরাল ৭শ-১ হাজার, টেংরা ৬শ- ৭শ, বোয়াল ৭শ-৮শ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, কোরবানির পর থেকে অস্থির চালের বাজার এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

বাজারে প্রশাসনের তদারকি না থাকার সুযোগে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষাকারী সংগঠন ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন। 

তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের কারসাজিতে মুরগির দাম বেড়েই চলেছে। কিন্তু প্রশাসন এখনও তদারকি কার্যক্রম শুরু করেনি। দ্রুত কার্যকর তদারকি কার্যক্রম না চালালে দাম আরও বাড়বে।