Image description

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ঢাকা-বগুড়া হাইওয়ে সড়কের পাশ দিয়ে ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অসংখ্য হোটেল। এসব হোটেলের সামনে মহাসড়কের দু’পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে খাবার খাওয়ায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ যাত্রী, স্থানীয় জনগণ ও ছোট-বড় যানবাহনের চালকেরা।

প্রতিদিনই এসব দৃশ্য প্রশাসনের চোখের সামনে পড়লেও নীরব ভূমিকায় হাইওয়ে পুলিশ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা -বগুড়া মহাসড়কের  হাটিকুমরুল থেকে চান্দাইকোনা পযন্ত ১৫ কিলোমিটার হাইওয়ে সড়কের পাশ দিয়ে গড়ে তুলেছে প্রায়  ৩২ টি হোটেল। এসব হোটেলে পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় ট্রাক ও বাসগুলো হাইওয়ের সড়কের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখছে। যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচলে,বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

হাইওয়ে সড়কে দেখা যায়, উপজেলার ঘুড়কা ইউনিয়নের ঘুড়কা এলাকায় একই স্থানে গড়ে উঠেছে ৮ টি হোটেল। রাস্তার পশ্চিম পাশে মামা-ভাগ্নে, চাচা-ভাতিজা, ডিসান, সততা, ভুইয়া ও সড়কের পূর্ব পাশে পাপিয়া, মামা-ভাগ্নে, লালন শাহী হোটেল। এসব রেষ্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার জন্য মহাসড়কের ওপর প্রতিদিনই দেখা যায় সারি সারি দাঁড়ানো শত শত গাড়ি। হাইওয়ে সড়কে গাড়ী গুলো রাখায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। এতে চরম বিপাকে পড়ছে রাস্তায় চলাচল করা  ছেট বড় যানবাহন চালক ও সাধারণ জনগন।
 
স্থানীয়রা জানান, রেস্টুরেন্টের মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ভাবে গাড়ী পাকিং করে আসছে। প্রশাসনের নিরভ ভূমিকার ফলে এলাকার কেউ তাদের বিরুদ্ধে টু শব্দ করার  সাহস পাচ্ছেন না।
 
ঘুড়কা মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করা স্থানীয় বাসিন্দা শরিফুল, ইসমাইল, শুকুর আলী ও মজিবর রহমান বলেন, প্রতিদিন আমরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। বছরের পর বছর ঘুড়কার হোটেলগুলোর সামনে মহাসড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ঘুমানো ও খাবার খাওয়ায় সড়কের দুই পাশ বন্ধ হয়ে যায়,এতে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয় আমাদেরকে। অনেক সময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও যানজটের কারণে আটকে যায়। তাছাড়া প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। হাইওয়ে সড়কের ওপর গাড়ি পার্কিং সম্পুর্ন বেআইনি। আমরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি। 

মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা ঘুড়কা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সিহাব দৈনিক মানবকণ্ঠকে জানান, নয়ন, রুমানা খাতুন ও নাজনীন বলেন, আমরা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুল যাওয়া আসা করি। কিন্তু যানজটের কারণে ক্লাসে উপস্থিত হতে প্রায়ই দেরি হয়ে যায়। অনেক সময় হেঁটে হেঁটে রাস্তার পাশ দিয়ে সড়কে দাঁড় করানো গাড়ির ফাঁক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে গিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। আমাদের মাঝে মাঝে ভয় হয়, কখন যেন কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। আমরা চাই এই রাস্তা হোটেল ব্যবসার জায়গা না হয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের চলাচল করে দেওয়া জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।

ঘুড়কা চাচা-ভাতিজা হোটেল মালিক শরিফুল ইসলাম জানান, হাইওয়ে সড়কের উপরে গাড়ি পার্কিং করা সম্পুর্ন বেআইনি। আর যাতে মহাসড়কের উপর গাড়ি না রাখে আমরা সেই চেষ্টা করবো। মামা-ভাগ্ন হোটেল মালিক আব্দুল আলীম বলেন, আমার হোটেলে সামনে গাড়ী কম থাকে।অন্য হোটেলের গাড়ি রাস্তায় দাড়ায়। 

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রউফ জানান, আমরা এ ব্যাপারে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করে, প্রযোজনী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। হাইওয়ে বগুড়া জোনের পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ বলেন, নিজস্ব জায়গাতে হোটেল ব্যবসা করতে হবে। মহাসড়কে অযথা গাড়ী পাকিং করা সম্পুর্ন বেআইনি। সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।