থানায় আটকে রেখে চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

বিকাশ ব্যবসায়ীকে থানায় আটকে রেখে চেক ও স্ট্যাম্পের স্বাক্ষর নেয়ার প্রতিবাদে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার দুই ওসি একজনে এসআই ও দুইজন কনস্টেবলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী। রবিবার (২০ জুলাই) সকাল ১১টায় বরিশাল প্রেসক্লাবে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম স্বপন এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাইনুল ইসলাম স্বপন বলেন, নগরীর বাংলা বাজার মোড়ের একজন বিকাশ ব্যবসায়ী। বিএমপির গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত কনস্টেবল রাশেদের সাথে সু-সম্পর্ক থাকার কারনে তার কাছ থেকে ব্যবসার প্রয়োজনে মাসে ২১ হাজার টাকা লাভের বিনিময়ে ২০২৩ সালের ২ মার্চ ৭ লাখ টাকা ধার নেয়।
ধারের টাকার জামানত হিসাবে ব্লাংক চেক ও ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় কনস্টেবল রাশেদ। লাভের টাকার পাশাপাশি ধারের টাকা পরিশোধ করে দেয় ব্যবসায়ী স্বপন। এক পর্যায়ে তার ধার ও লাভের টাকা পরিশোধ হয়ে যায়। কিন্তু টাকা পরিশোধ হয়ে গেলেও জামানত হিসাবে রাখা ডকুমেন্টস চেক ও স্ট্যাম্প ফেরত দেয়নি রাশেদ। ডকুমেন্টস ফেরত না দিয়ে উল্টো স্বপনের কাছে ৪ লাখ টাকা দাবী করেন। টাকা না দিলে মামলার হুমকি দেন কনস্টেবল রাশেদ। ব্যবসায়ী স্বপন ৪ লাখ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কনস্টেবল রাশেদের স্ত্রী ফারজানা বেগমকে বাদী করে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় আমার নামে অভিযোগ দেয়।
লিখিত বক্তব্যে স্বপন আরো বলেন, অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই রুহুল আমিন বিষয়টি সমঝোতার জন্য স্বপনকে থানায় ডাকলে গত (১৮ জুলাই) শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১ টায় থানায় যান। থানায় যাওয়ার সাথে সাথে কোন কিছু জিজ্ঞাসা না করেই তার কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ এবং যাবতীয় সব কিছু রেখে রুমে আটকে রাখে। তার সাথে অমানবিক আচরন করেন ওসি তদন্ত শেখ মিজানুর রহমান। তার উপরে চাপ প্রয়োগ করেন এবং মামলা দিয়ে কোর্টে চালান দেয়ার হুমকি প্রদান করেন।
এক পর্যায়ে স্বপনের বৃদ্ধ মাকে থানায় ডেকে একই ধরনের হুমকি প্রদান করেন তারা। স্বপনের মা অসহায় হয়ে পড়েন। তাকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকার চেক ও ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় তারা এবং তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই রুহুল আমিন নিজে চেক লিখে তার মায়ের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেয়।
স্বপ্ন আরো বলেন, রাশেদের চাচাতো ভাই কোতয়ালী থানার এসি অফিসে কর্মরত কনস্টেবল হুমায়ুন তার মোটরবাইকে করে তার দোকান নিয়ে কনস্টেবল রাশেদকে ধারের ৭ লাখ টাকা পরিশোধের সকল ডকুমেন্টস চাপ প্রয়োগ করে নিয়ে যায়। স্বপনের মোবাইলে থাকা টাকা পরিশোধের সকল ডকুমেন্টস এস.আই রুহুল আমিন নিজ হাতে ডিলিট করে দেন।
কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান ও তদন্ত ওসি শেখ মিজানুর রহমান ৬ ঘন্টা তাকে আটকে রেখে তাদের পুলিশ সদস্য রাশেদের পক্ষ নিয়ে তার কাছ থেকে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রেখে ছেড়ে দেয়। তাদের দাবীকৃত টাকা পরিশোধ না করিলে মামলার হুমকি দেন। এ ঘটনা নিয়ে বারাবারি করতে নিষেধ করেন।
স্বপনের সাথে অমানবিক আচরনের বিচার পেতে পারেন সে বিষয়ে বরিশাল মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার সহ অন্তত কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বিষয়টি জানতে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমানকে ফোন করা হলে তা রিসিভ করেননি।
Comments