Image description

সাভারের আশুলিয়ায় বার্ডস গ্রুপের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি নিয়ে সড়ক অবরোধ করায় তিন সড়কে ২৬ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নবীনগর-চন্দ্রা, আব্দুল্লাহপুর এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পথচারীরা। 

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সাভার হাইওয়ে থানার ইনচার্জ আইয়ুব আলী যানজটের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কের নবীনগর থেকে শ্রীপুর পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কে যানজট দেখা গেছে। 

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে তারা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে অবস্থান নেন। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ১০টায়ও তাদের সড়কে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। গতকাল গভীর রাতে বৃষ্টিতে ভিজেও সড়কে অবস্থান করেন তারা। এতে চন্দ্রামুখী সড়কে নবীনগর থেকে বাইপাইল পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার ও ঢাকামুখী লেনে কবিরপুর থেকে বাইপাইল ১০ কিলোমিটার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অবরোধের কারণে নবীনগর ত্রিমোড়কে কেন্দ্র করে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশাপাশি ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচামুখী সড়কে প্রায় নবীনগর থেকে সাভারের দিকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ও ঢাকামুখী সড়কে নবীনগর থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। 

জানা গেছে, বার্ডস গ্রুপের ৪টি কারখানা বার্ডস আর এন আর ফ্যাশন্স লিমিটেড, বার্ডস গার্মেন্টস, বার্ডস ফেডরেক্স, বার্ডস এ অ্যান্ড জেড লিমিটেড পাওনাদি পরিশোধ না করে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে এসব কারখানার প্রায় ২ হাজার বিক্ষুদ্ধ শ্রমিক সড়ক অবরোধ করেন। 

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বার্ডস গ্রুপের শ্রমিক বাবু বলেন, আমাদের ৩০ সেপ্টেম্বর সমস্ত পাওনাদি পরিশোধ করার কথা ছিল। এরমধ্যে তিন মাসের সময় নিয়ে তারা নোটিশ টানিয়ে দেয় যে পাওনাদি তিন মাস পর পরিশোধ করা হবে। আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে কীভাবে মালিকপক্ষ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের সার্ভিস বেনিফিট, ছুটির টাকা, অন্য কোনো বকেয়া থাকলে সেগুলো ৩০ সেপ্টেম্বর দেওয়ার কথা ছিল।

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে রানিং ফ্যাক্টরি লে-অফের নোটিশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়। এক বছর উপরে যাদের চাকরির বয়স তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, যাদের চাকরির বয়স এক বছরের কম তাদের কী কোনো ক্ষতি হয়নি।

বার্ডস গ্রুপের কারখানাগুলো বাইপাইল বুড়ির বাজার এলাকায় অবস্থিত। এই কারখানাগুলো গত ২৮ আগস্ট থেকে লে-অফ ঘোষণা করে। পরে শ্রমিকরা লে অফে থাকতে রাজি না হলে পরবর্তীতে কারখানা ১২৪ (ক) ধারায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

বার্ডস গ্রুপের শ্রমিকরা জানিয়েছে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধের কথা ছিল। তবে শ্রমিকরা সকালে কারখানার সামনে এসে দেখেন, কারখানা ফটকে পাওনাদি পরিশোধের সময়সীমা তিন মাস বৃদ্ধি সংক্রান্ত নোটিশ লাগিয়ে রেখেছে মালিকপক্ষ। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ নোটিশ জারি করে বার্ডস গ্রুপ।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, বার্ডস গ্রুপ তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণার পর পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে বিজিএমইএ, শ্রমিকসহ সকল পক্ষের একটি বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল গ্রুপটির শ্রমিকদের যাবতীয় পাওনাদি পরিশোধের কথা ছিল।

সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, গতকাল থেকে বাইপাইলে একই অবস্থা। সড়কে যান চলাচল বন্ধ। কোনো বিকল্প ব্যবস্থাও নেই।