বিএনপি নির্বাচনে আসলে আমরা সহায়তা করব: ইসি আলমগীর
এবারও আসছে পুনঃতফসিল!
বিএনপি নির্বাচনে আসলে আমরা সহায়তা করব: ইসি আলমগীর

রাজপথের অন্যতম বড় দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর তফসিল প্রত্যাখ্যান, রাষ্ট্রপতির কাছে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের তফসিল পেছানোর অনুরোধ, অংশগ্রহণ নির্বাচন নিশ্চিতে আর্ন্তজাতিক চাপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ এবং সংস্থার পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখাসহ নানামুখী কারণে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী সম্পন্ন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ যে সংস্থাটির সদস্য সেই কমনওয়েলথও পর্যবেক্ষক বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়নি এখনও। যুক্তরাষ্ট্র তো বেঁকে আছে আগে থেকেই। যদিও ইইউ ছোট্ট পরিসরে (চারজন সদস্য) পর্যবেক্ষক পাঠাতে রাজী হয়েছে।
এদিকে সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে দেশে চলছে হরতাল, অবরোধসহ নানা কর্মসূচি। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বাড়ছে নাশকতাও। সব মিলিয়ে ভোটের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে নির্বাচন কমিশনেরও (ইসি)। তাই তফসিল ঘোষণা করলেও নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি এখনও চাচ্ছে, ভোটে সবার অংশগ্রহণ থাকুক। বিএনপিসহ ভোটবিমুখ দলগুলো ফিরে আসুক। এতে একদিকে যেমন ভোট সর্বজনগ্রাহ্য হবে তেমনি দেশে অস্থিরতাও কমে আসবে। আর এই কারণে প্রয়োজনে পুনঃতফসিল ঘোষণারও ইঙ্গিত দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
এ বিষয়ে গত দুই দিনে পৃথকভাবে পুনঃতফসিলের ইঙ্গিত দিয়েছেন সিনিয়র দুই নির্বাচন কমিশনার। সোমবার (২০ নভেম্বর) রাশেদা সুলতানা বলেন, 'নিশ্চয়ই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এখনও স্পেস আছে। মাঠের রাজনীতিতে যখন বিভাজন তৈরি হয়েছে, তখন শান্ত নাকি অশান্ত তা আমার বলতে হবে না। আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন। জনগণও দেখতে পাচ্ছে। পরিবেশ অশান্ত আছে, তাই বলে শান্ত হবে না- এমন তো কোনো কথা নেই। যেকোনো মুহূর্তে শান্ত হতে পারে।' তিনি বলেন, 'যদি সময় বাড়ানো প্রয়োজন হয়, আমরা বাড়াব। যদি বাড়ানোর প্রয়োজন না হয়, এভাবেই হয়, তাহলে হবে। কোনো অসুবিধা নেই।'
রাজনৈতিক ও নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় সংসদের গত তিন নির্বাচনেও সব দলের অংশ নেয়া, না নেয়ার দোটানায় তফসিল পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনাবহুল ছিল ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এবার যেমন বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেবার এমন অবস্থানে ছিল আওয়ামী লীগ। নানা ঘটনার পরম্পরায় ওই সময়ে তফসিল ঘোষণার পর তিন দফায় তা সংশোধন করা হয়। অর্থাৎ তিনবার পুনঃতফসিল হয়। সবশেষ গত নির্বাচনেও (একাদশ জাতীয় নির্বাচন) ঐক্যফ্রন্টসহ বেশ কয়েকটি দলের অনুরোধে তফসিল পেছানো হয়েছে। প্রথমে ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন ধার্য্য করা হলেও পুনঃতফসিলে সেটি ৩০ ডিসেম্বর করা হয়। তারা মনে করছেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে এবারও ইসি পুনঃতফসিল ঘোষণা করতে পারে। এমন ইঙ্গিত গত দুই দিন ধরেই ইসি থেকে পাওয়া যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে নির্বাচনে বিমুখ দলগুলোর নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলেই এমনটি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে বিএনপি ও সমমনাদের চলমান অবরোধ এবং বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এই তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর, বাছাই ১-৪ ডিসেম্বর, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬-১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। এর পরদিন ১৮ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।
তফসিল ঘোষণার পর থেকেই অস্থির হয়ে আছে দেশ। বিরোধী দলগুলো তফসিলের প্রতিবাদ ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নানা কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। এমন প্রেক্ষাপটে গত পরশু রবিবার বিএনপি নির্বাচন এসে যদি সহায়তা চায় কমিশন অবশ্যই সহায়তা করবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হবে বলেও জানান তিনি।
মো. আলমগীর বলেন, 'বিএনপি যদি বলে আমরা নির্বাচন করবো, আমাদের সহায়তা করেন। তাহলে অবশ্যই আমরা সহায়তা করবো। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব আমাদের না। যেসব দল নির্বাচনে অংশ নেবে, তাদের জন্য যতরকম চেষ্টা করা তা করা হবে। যারা নির্বাচনে আসবে না তাদের ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।'
এদিকে গতকাল নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, 'বিএনপি নির্বাচনে ফিরতে চাইলে নির্বাচন কমিশন আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।' এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমার জানা মতে পূর্বেও ওনারা একটু পরেই নির্বাচনে এসেছিলেন এবং সুযোগটা পেয়েছিলেন। এবারও ওনারা যদি ফিরতে চান, কীভাবে কী করা যাবে নিশ্চয়ই আমরা আলোচনা করব। ওনারা সিদ্ধান্ত নিলে, আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করব। ওনারা আসতে চাইলেন আর আমরা ফিরিয়ে দেব, এমনটা হবে না। আমরা তো চাই সব দল এসে একটা সুন্দর নির্বাচন হোক। বিস্তারিত এখন কিছুই বলব না। ওনারা যদি আসেন আমরা কমিশনাররা বসব, আইনকানুন দেখব। তারপর যেটা সিদ্ধান্ত হয়, হবে। অগ্রিম কিছু বলতে পারব না।'
এই বিবেচনার মধ্যে কী পন্থা আছে জানতে চাইলে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'কী পন্থা আছে এই মুহূর্তে আমি বিস্তারিত বলতে পারব না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার জানা মতে ওনারা এসেছিলেন। ওই নির্বাচনে ওনাদের জন্য একটু স্পেস তৈরি করা হয়েছিল। আমরা যেভাবে আইনে আছে, সেভাবেই করব। আমি ডিটেইল আর কিছু বলব না।' তবে একটি সূত্র জানায়, মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা জানিয়ে সংলাপ দাবি করেন সেখানে সংক্ষিপ্ত সংলাপও হতে পারে।
জাতীয় পার্টি তফসিল পেছানোর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন জানিয়েছে। তফসিল একটু পেছানো যায় কি না- এ প্রশ্নের জবাবে রাশেদা বলেন, 'এ বিষয়ে আমরা কিছুই বলব না। অগ্রিম বলার সময় এখনও আসেনি। যখন আসবে, যেটা হবে, সেটাই বলব। পরিস্থিতি যখন আসবে, পরিস্থিতি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। অগ্রিম এ বিষয়ে কোনো কথাই বলব না। বলা উচিত নয়। ওনারা এলে আমরা ওয়েলকাম করব। এটার জন্য, ওনাদের জন্য আইন অনুযায়ী যেভাবে পথ সৃষ্টি করতে হবে সেভাবে করব। কিন্তু আগেই বলব না।'
রাশেদা সুলাতানা বলেন, 'সংকট সৃষ্টি হওয়ার আগেই যদি ওনারা আসেন? কাজেই এখনই কিছু বলব না। অতীতে যেভাবে হয়েছে আমরা দেখব। যদি সময় বাড়ানো প্রয়োজন হয়, আমরা বাড়াব। যদি বাড়ানোর প্রয়োজন না হয়, এভাবেই হয়, তাহলে হবে। কোনো অসুবিধা নেই। যদি এই তফসিলের মধ্যেই আসে, তাহলে তো তফসিলে হাত দেয়ার দরকার নেই।'
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, 'নিশ্চয়ই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের এখনও স্পেস আছে। মাঠের রাজনীতিতে যখন বিভাজন তৈরি হয়েছে, তখন শান্ত নাকি অশান্ত তা আমার বলতে হবে না। আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন। জনগণও দেখতে পাচ্ছে। পরিবেশ অশান্ত আছে, তাই বলে শান্ত হবে না এমন তো কোনো কথা নেই। যেকোনো মুহূর্তে শান্ত হতে পারে।'
তিনি দলগুলোর উদ্দেশ্যে বলেন, 'আমাদের প্রতি আস্থা রাখুন। আসুন, নির্বাচন করুন। নিঃসন্দেহে আপনারা একটা ভালো, সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন। ভোটাররা এসে স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। তাদের যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দেবেন। নিশ্চয়ই আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করব।'
তফসিল পরিবর্তন হয়েছে একাধিকবার: জাতীয় সংসদের গত তিন নির্বাচনেও সব দলের অংশ নেয়া, না নেয়ার দোটানায় তফসিল পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনাবহুল ছিল ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এবার যেমন বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেবার এমন অবস্থানে ছিল আওয়ামী লীগ। নানা ঘটনার পরম্পরায় সেবার তফসিল ঘোষণার পর তিন দফায় তা সংশোধন করা হয়। অর্থাৎ তিনবার পুনঃতফসিল হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর তত্ববধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথগ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। এর প্রায় একমাস পর ২৬ নভেম্বর বঙ্গভবনে বৈঠক সেরে ২৭ নভেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণের তারিখ ঠিক করা হয় ২০০৭ সালের ২১ জানুয়ারি। বিএনপি তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানায়। কিন্তু ১৪ দল জানিয়ে দেয় তারা এ তফসিল মানে না। রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কায় তফসিল ঘোষণার পরদিন ২৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক সমঝোতা হলে তফসিলে পরিবর্তন হতে পারে। বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের বিশেষ দূত ক্রেগ জেনেসও নির্বাচনের পরিবেশ ও রাজনৈতিক সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এর মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল ডেমেক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) ২ ডিসেম্বর ঢাকায় এক জরিপের ফল প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে ১ কোটি ২১ লাখ ভোটারই ভুয়া, যা মোট ভোটারের ১৩ শতাংশ।
পরে নির্বাচন কমিশন সংঘাত ও নানামুখী অবস্থা বিবেচনায় ৭ ডিসেম্বর সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করে। এতে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২২ জানুয়ারি। সংশোধিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষদিন ছিল ২০০৬ সালের ২১ ডিসেম্বর। এর আগেই ১৮ ডিসেম্বর পল্টনে ১৪ দলের জনসভায় জাতীয় পার্টি (এরশাদ) ও এলডিপি নিয়ে মহাজোটের ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তফসিল বাতিল করে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবি জানান। না হলে ২১ ডিসেম্বর সারা দেশে হরতাল পালনের হুঁশিয়ারি দেন। পরদিন ১৯ ডিসেম্বর পল্টনে জনসভা করে চারদলীয় জোট। এতে খালেদা জিয়া বলেন, সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্ববধায়ক সরকারের ৯০ দিন মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। এমন অবস্থায় ২০ ডিসেম্বর তফসিলে চতুর্থবারের মতো সংশোধন আনে কমিশন। তবে এবার ভোটগ্রহণের তারিখে কোনো পরিবর্তন করা হয় না। ২২ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঠিক রেখে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় তিনদিন পিছিয়ে ২৪ ডিসেম্বর করা হয়। এরপর নানা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি নতুন করে তত্ত্ববধায়ক সরকার গঠন করা হয়। নতুন নির্বাচন কমিশন ২০০৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে।
দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচন: লাগাতার অবরোধ, নাশকতা আর সহিংসতার মধ্যেই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর। সে রাতেই তফসিল প্রত্যাখ্যান করে রাজনৈতিক সমঝোতার দাবি জানায় বিএনপি। তবে নির্ধারিত তারিখেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন নিয়ে চলা মতপার্থক্য আর বিতর্কের মধ্যেই ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হয় ২৩ ডিসেম্বর। তখন নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সাত দফা দাবি জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে আওয়ামী লীগ ভোটের তারিখ পেছানোর বিরোধীতা করে। তিনদিন পর ঘোষিত পুনঃতফসিলে ভোটের তারিখ নির্ধারণ হয় ৩০ ডিসেম্বর।
পুনঃতফসিলের ক্ষমতা: ঘোষিত তফসিল সংশোধনের এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের আছে। সংবিধানের সপ্তম ভাগে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, 'রাষ্ট্রপতি পদের ও সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ এবং অনুরূপ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং নির্বাচন কমিশন এই সংবিধান ও আইনানুযায়ী দায়িত্ব পালন করিবেন।'
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের একজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কমিশন চাইলে তফসিলের সংশোধন ও নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তন করতে পারে। সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে। এই সময়ের মধ্যে ভোটগ্রহণের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে, প্রয়োজন অনুযায়ী সেটি পরিবর্তন করা যাবে।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত। ক্ষমতাসীন দলসহ ১০টি দল এরই মধ্যে জোটবদ্ধ হয়ে ভোটে অংশ নেবে বলে জানিয়েছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এখনও কোনো সাড়া দেয়নি। বরং তারা এক দফা দাবি আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। বেশ কয়েকটি দল তাদের প্রার্থী নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রিও শুরু করেছে।
মানবকণ্ঠ/এফআই
Comments