Image description

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। ইউরোপ-আমেরিকায় আমরা দেখেছি যখন কোনো একটি গাড়ি থেকে হর্ন বাজানো হয়, পেছনের গাড়ি তাকে জিজ্ঞাসা করে হর্ন কেন দেওয়া হয়েছে। হর্ন দেওয়া গালি দেওয়ার মতো। অন্য দেশগুলোতে সেভাবেই এটিকে মনে করে।

রোববার (৪ জুন) সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের মানুষকে সচেতন করতে হবে। বিশেষ করে হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধ করতেই হবে। হাইড্রোলিক হর্নের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সে জন্য আমরা একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। যার মাধ্যমে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটা করে সভা করেছি। পরবর্তীতে জেলা শহরে মসজিদের ইমাম ও পুরোহিতসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও চালকদের নিয়ে সভা করেছি। তারা যাতে হর্ন না বাজায়, সে বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে চেষ্টা করেছি। আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখেছি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুল হামিদ বলেন, এবার সারাদেশে আমরা আন্তর্জাতিক শব্দদূষণ দিবস পালন করেছি। গত মাসে আমরা দিবসটি পালন করার সময় একদিনে সবচেয়ে বেশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছি। হাজার হাজার হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করে ধ্বংস করেছি। একই সঙ্গে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৬ সংশোধন করে হালনাগাদ করার চেষ্টা করছি।

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ বলেন, হর্ন নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে আমরা আরেকটি প্রকল্প নিয়েছি।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে পরিচালনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে জনভোগান্তি হবে। সে কারণে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) শক্তিশালী করা হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীকেও প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবো। যাতে মানুষকে ভোগান্তি না দিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারি, যোগ করেন তিনি।

সচিব বলেন, প্রতিটি গাড়িতে ‘নো হর্ন’ স্টিকার ব্যবহার করতে হবে। সড়ককে শতভাগ ‘নো হর্ন’ প্রচারের আওতায় নিয়ে আসতে চাচ্ছি। সরকারি ও সরকারি ঋণ নিয়ে যেসব কর্মকর্তা গাড়ি কিনছেন, তাদের জায়গা থেকেও হর্ন না-বাজানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, মাইক্রোফোন ব্যবহার করে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন প্রচার করা হচ্ছে। তাতে আমরা শব্দদূষণের শিকার হচ্ছি। এ কাজটি করতে গেলে আমাদের ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

শাহাব উদ্দিন বলেন, আপনারা বলেছেন মন্ত্রীরা হর্ন বাজানো বন্ধ করলে শব্দদূষণ অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আপনাদের মাধ্যমে আমি জানাতে চাই, মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা এ শব্দদূষণ নীতিমালা মেনে চলবেন। তাহলে সাধারণ মানুষ হর্ন না-বাজাতে উৎসাহিত হবেন।

শব্দদূষণ কবে বন্ধ হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলমান প্রক্রিয়ায় এটি করতে হবে। শব্দদূষণ ব্যবহারে আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা যত প্রচার করবেন, সাধারণ মানুষ তত সচেতন হবেন।

এসময়ে পরিবেশ উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক ড. আবদুল হামিদও উপস্থিত ছিলেন।

মানবকণ্ঠ/আরএইচটি