ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি বন্ধে নানা উদ্যোগ


  • অনলাইন ডেস্ক
  • ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:৫৩,  আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৪:১০

রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো উন্নত করতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যাত্রীদের দোরগোড়ার দ্রুত সেবা পৌঁছে দিতে ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। এরই অংশ হিসেবে প্রথমেই পরিবর্তন আনা হচ্ছে রেলে টিকিট বিক্রয় পদ্ধতিতে। কালোবাজারিদের থাবা বন্ধ করতে টিকিট কিনতে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ। কয়েকটি ট্রেনের টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। তবে আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগে তা সব ট্রেনের টিকিট ক্রয়ে বাধ্যতামূলক করা হবে।

এ ছাড়া ঈদে যাত্রীদের দ–র্ভোগ কমাতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছাড়াও আরো কয়েকটি স্পটে বিক্রি করা হবে রেলের অগ্রিম টিকিট। পাশাপাশি যাত্রীরা যেন সহজেই টিকিট পান সেজন্য চালু হচ্ছে রেলওয়ে অ্যাপস। এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, ঈদে অগ্রিম টিকিটের জন্য যাত্রীরা কমলাপুরে ভিড় করায় খুবই ভোগান্তি হয়। তাই এবার কমলাপুরের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেটা হতে পারে রেলভবন, টিএসসি, যাত্রাবাড়ীসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে। আশা করা যায়, খুব অল্প সময়ের মধ্যে জনগণ রেলের সর্বোচ্চ সেবা পাবেন। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রেলের টিকিট কাটাসহ ঝামেলা মুক্ত সেবা দিতে চলতি মাসেই চালু হচ্ছে রেলওয়ে অ্যাপস। এর মাধ্যমে একজন যাত্রী শুধু টিকিটই নয় রেলের আসনগুলো কেমন হবে এবং কোন দূরত্বের ভাড়া কত, তা জানতে পারবেন। জানা যাবে ট্রেনের বর্তমান অবস্থানও।

যাত্রা শেষে যাত্রীরা সেবার মান সম্পর্কেও রেটিং দিতে পারবেন। এ ছাড়া এ অ্যাপসের মাধ্যমে ট্রেনের লিস্ট থেকে জানা যাবে কোন ট্রেন কোথায় যাবে। ভিসা, মাস্টার কার্ড, বিকাশ জাতীয় ওয়ালেটের মাধ্যমে টিকিটের মূল্য পরিশোধ করা যাবে। সূত্র আরো জানায়, আগে ট্রেনের মোট টিকিটের ৬৫ শতাংশ বিক্রি হতো কাউন্টার থেকে। বাকি ৩৫ শতাংশের ২৫ শতাংশ অনলাইন ও মোবাইলে বিক্রি হতো। পাঁচ শতাংশ ভিআইপি ছাড়াও বাকি পাঁচ শতাংশ রেল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দ থাকত। রেলওয়ে অ্যাপসটি চালু হলে সিংহভাগ টিকিটই দেয়া হবে অ্যাপসে। যেসব যাত্রী অ্যাপসের মাধ্যেমে টিকিট কাটতে চান না তাদের জন্য কাউন্টার থেকে টিকিট দেয়া হবে। অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে টিকিট সংগ্রহের ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে জনসে াতে পরিণত হয় কমলাপুর রেলস্টেশন। তবে দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে কাক্সিক্ষত টিকিট পান না যাত্রীরা। আবার অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে হিমশিম খান স্টেশন কর্তৃপক্ষও। তাই এবার ঈদের টিকিট রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়।

উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে অন্যবারের মতো এবার ঈদের অগ্রিম টিকিট সংগ্রহে যাত্রীদের কমলাপুরে ভিড় করতে হবে না এবং ভোগান্তি ছাড়াই টিকিট ক্রয় করতে পারবেন যাত্রীরা এমনটি দাবি সংশ্লিষ্টদের। এ ছাড়া ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে কালোবাজারিদের থাবা বন্ধ করতে ১৫ এপ্রিল থেকে আরো ১২টি ট্রেনের টিকিট ক্রয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন নম্বর ব্যবহার বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- ধূমকেতু এক্সপ্রেস, সিল্কসিটি, সুন্দরবন, একতা, নীলসাগর, রংপুর, সীমান্ত, উপবন, উদয়ন, হাওর, তিস্তা, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস।

ফলে সব মিলিয়ে ১৬টি ট্রেনের টিকিট কাটতে এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন নম্বর লাগবে। বাকি ট্রেনেও ন্যাশনাল আইডি কার্ড ব্যবহার করে টিকিট ক্রয়ের ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। ঈদের আগেই এটি সব ট্রেনের টিকিট ক্রয়ে বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিচ্ছে রেলওয়ে। ফলে টিকিট কালোবাজারির সুযোগ থাকবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট ক্রয়ের সুযোগ থাকবে। তবে এ বিষয়ে আরো প্রযুক্তিগতভাবে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায় তা গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

মানবকণ্ঠ/এএম


poisha bazar