জল থেকে ডাঙ্গায় মান্তা!


  • প্রতিনিধি, দৈনিক মানবকণ্ঠ
  • ১০ অক্টোবর ২০২২, ১৮:২১

ছাইওয়ালা ছোট ছোট নৌকার বহর। এখাট-ওখাট ছুটে চলা। নৌকাতেই জীবন শুরু ও শেষ। নৌকাতেই কাটিয়ে দেয় সারাজীবন। নদী থেকে নদীতে বয়ে চলা তাদের জীবন-জীবিকা। এমনই একটি মুসলিম সম্প্রদায়কে দেখা যায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্লুইস গেট খাল গোড়ায়।

নদীর জলে আগুন জ্বলে কখনো কি শুনেছেন? নদীর জলে হয়তো আগুন জ্বলে না। কিন্তু নদীর জলের উপরে যাদের বসবাস। জন্ম মৃত্যু বিয়ে সবটাই জলের উপরে। জলের উপরে ভাসা মানুষের মনের দুঃখ কষ্ট তো জলের উপরেই গাঁথা। এমনকি মৃত্যুর পরে ভাসিয়ে দেয়া হতো নদীতে তাইতো বলাই যায় জলের উপরে আগুন জ্বলা তো নিছখ ছেলে খেলা।

পৃথিবীতে জন্ম নিয়ে ও তাড়া কোনদিন মাটির অংশীদারিত্ব দাবি করতে পারেনি। যেন তারা মানুষ নয়। মনে হয় নদীর জলে ভেসে থাকা একটুকরো সেওলা। তবে এই ভাসমান জলের মানুষ ডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর উপহাররে ঘর পেয়েছেন। জলরে মানুষ ডাঙ্গায় আশ্রয় পেয়ে তারা মহাখুশি।

এই জলে ভাসা মানুষের দুঃখ কষ্ট জলে ভাসতে ভাসতে তার কানে পৌছায়। তখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৬৩ টি মান্তা সম্প্রদায়ের পরিবারের জন্য নদীর পাড়ে ঘর নির্মাণ করেন। ইতিমধ্যে ৩৩ টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩০ টি পরিবারের জন্য ৩০ টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলোমান রয়েছে।

এখন থেকে তাড়াও পাবে মাটি। মৃত্যুর পরে তাদের ও দাফন হবে মাটিতে। ঘর পাওয়া এসব পরিবারের মধ্যে এখন খুশির ঝিলিক। এমনকি তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য করে দেওয়া হয়েছে ভাসমান স্কুল। মান্তা সম্প্রদায়ের নতুন সংগ্রামে বদলে যাবে তাদের জীবন-যাপন।

নতুন ঘর পাওয়া মান্তাপাড়ার বাসিন্দা মতিজান বিবি, নয়নতারা বেগম, শেফালী বেগম, মুঙ্গুলি বেগমসহ অনেকেই বলছিলেন জীবন বদলে যাওয়ার গল্প।

তারা জানান, আগে মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে নৌকায় নৌকায় মাছ ধরে বিক্রি করে দিন কাটতেন। ঝড়-ঝঞ্ঝায় অনেকের মৃত্যুও ঘটেছে। এমনকি মরে গেলে তাদের মাটি দেয়ার জায়গা ছিলনা। তাদেরকে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। এখন প্রধানমন্ত্রী উপহার ঘর পেয়ে মাথার ওপর যেমন ছাদ পেয়েছেন, তেমনি জীবন বদলানোর নতুন আশাও দেখছেন তারা ।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ৬৩ টি মান্তা সম্প্রদায়ের পরিবারের জন্য নদীর পাড়ে ঘর নির্মাণ করা হবে। ইতি মধ্য ৩৩ টি পরিবার কে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩০ টি পরিবারের জন্য ৩০ টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলোমান রয়েছে।

মানবকণ্ঠ/এসআরএস


poisha bazar