অটোচালক থেকে মেয়র, যেন সিনেমাকেও হার মানায়

- অনলাইন ডেস্ক
- ২২ এপ্রিল ২০২২, ২১:১৯
জীবন পরিবর্তনশীল। কার জীবনে কখন কোন পরিবর্তন আসবে তা আগে থেকে কেউ বলতে পারেন না। আজ আপানাদের জানাবো এমন এক ব্যাক্তির জীবনকাহিনি যা সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে। যা একদম সত্য ঘটনা।
অটোচালক থেকে তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুর জেলার কুম্বাকোনাম পুরসভার মেয়র। কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো কে সরবাননের জীবন কাহিনি আসলেই হার মানাবে সিনেমার গল্পকেও।
দু’দশক ধরে অটোচালক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেই সরবাননই কুম্বাকোনাম পুরসভার প্রথম মেয়র হিসেবে নিযুক্ত হলেন।
খুব অল্প বয়সে মা-বাবাকে হারান। সরবানন মানুষ দাদু-ঠাকুমার কাছে। সরবাননের পড়াশোনা দশম শ্রেণি পর্যন্ত। তার পর পড়াশুনোর পাট চুকিয়ে রোজগারের পথ খুঁজতে নামেন।
তামিলনাড়ুর থুক্কামপালায়মে একটি ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী এবং তিন সন্তানের সঙ্গে বাস ৪২ বছর বয়সী সরবাননের। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ভালোই সংসার চলছিল। কিন্তু বাধ সাধল করোনা। করোনা আবহে তার আয় অনেটাই কমে যায়। তলানিতে ঠেকে জমা পুঁজিও।
সারা দিনে ২০০ টাকা আয় করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছিল। এই চরম আর্থিক অনটনের মুখে সরবাননের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। খাদ্য এবং অর্থ সাহায্য করেন তারা। কিন্তু কেউই ভাবেননি যে, এই দিন আনা দিন খাওয়া সদাহাস্যময় মানুষটি এক দিন কুম্বাকোনাম শহর পুরসভার মেয়র হবেন।
কুম্বাকোনমের গায়ে আগে পুরসভার তকমা ছিল না। সম্প্রতি কুম্বাকোনম শহরকে নতুন পুরসভা হিসেবে ঘোষণা করে প্রশাসন। ভারতের অন্যতম এই মন্দির শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন সরবানন। মোট দু’হাজার একশো ভোটের মধ্যে ৯৬৪ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন তিনি।
সত্যি বলতে এই জয় তিনি নিজেও আশা করেননি। বরং আরো বেশ কয়েক জন হেভিওয়েট প্রার্থী ছিলেন যাদের জেতার সুযোগ আরো ভালো ছিল। জেতার পর তাকে মেয়র পদে বসার কথা বলা হলে তিনি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানান যে তিনি একজন অটোচালক এবং তার মেয়র হওয়ার যোগ্যতা নেই। কিন্তু নেতৃত্ব তাকে বলেন যে তিনিই এই পদের জন্য যোগ্য ব্যক্তি।
মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের দিন নিজের অটো চালিয়েই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন সরবানন। সরবানন জানিয়েছেন, মেয়র হওয়ার পর তার প্রধান লক্ষ্য, ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থার কাজ সম্পূর্ণ করা।
এছাড়াও মানুষের সুবিধার্থে খারাপ রাস্তা মেরামত, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ এবং রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর মতো মৌলিক সুবিধাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দিকে তার নজর থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।


