ধুঁকছে আয়ারল্যান্ড, সাকিবের ৫ উইকেট

- অনলাইন ডেস্ক
- ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৭:৪২
আগের ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, তাসকিন যেন শুরু করলেন সেখান থেকেই। ইনিংসের প্রথম বলেই ফেরালেন পল স্টার্লিংকে। অফ স্টাম্পের বাইরের বলটা তাড়া করতে গিয়েছিলেন আইরিশ অধিনায়ক, উইকেটের পেছনে ডানদিকে লাফিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন লিটন। দুর্দান্ত শুরু বাংলাদেশের, বীভৎস শুরু আয়ারল্যান্ডের।
প্রথম বলে উইকেট সাকিবেরও। সাকিবের বলটা ছিল শর্ট লেংথে। সেটিতে লরকান টাকার খেললেন অদ্ভূত এক শট। হাঁটু গেড়ে পুলের মতো করতে চেয়েছিলেন, শেষ মুহূর্তে কেমন ব্যাট থামিয়ে ফেললেন। স্কয়ার লেগে তাতেই অবশ্য রনির কাছে গেল সহজতম ক্যাচ। ৭ রানেই ২ উইকেট নেই আয়ারল্যান্ডের। তাসকিনের মতো প্রথম বলে উইকেট পেলেন সাকিবও।
ফিরতি ওভারে সাকিব ফিরেই বোল্ড করেছেন রস এডেয়ারকে। জায়গা থেকেই ব্যাট চালিয়েছিলেন, তবে আটকাতে পারেননি। ২৬ রানে ৩ উইকেট নেই, চট্টগ্রামে বিপদে আয়ারল্যান্ড।
এবং আরেকটি উইকেট। গুটিয়ে যেতে যেন তর সইছে না সফরকারীদের। সাকিবের নিচু হওয়া বলে ব্যাট চালিয়ে বটম-এজড হয়েছেন গ্যারেথ ডিলানি, সাকিবকে যিনি মেরেছিলেন একটি ছক্কা।
সাকিবের চতুর্থ। সুইপ করতে গিয়ে মিস করে গেছেন জর্জ ডকরেল, আম্পায়ার তানভীর আহমেদ দেন এলবিডব্লিউ। ডকরেল রিভিউ নিয়েছিলেন বটে, তবে সেটি নিতে হয় বলেই। বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, বল হিট করে যেত মিডল-লেগ স্টাম্প। সাকিব পেয়েছেন চতুর্থ উইকেট, আয়ারল্যান্ড হারিয়েছে পঞ্চম উইকেট।
সাকিবের পঞ্চম। আবার সুইপের চেষ্টা, আবার ব্যর্থ। এবার ব্যাটসম্যান হ্যারি টেক্টর। লাইন পুরো মিস করে লেগ স্টাম্প হারিয়েছেন তিনি। সাকিব পেয়েছেন পঞ্চম উইকেট, আয়ারল্যান্ড হারিয়েছে ষষ্ঠ উইকেট। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বার পঞ্চম উইকেট পেলেন সাকিব।
আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ ৭ ওভার শেষে ৬ উইকেটে ৫০ রান।
এর আগে এবার কার্টেল ওভারের ম্যাচে ১৭ ওভারেই ৩ উইকেটে ২০২ রানের পাহাড় গড়েছে টাইগাররা। অর্থাৎ সিরিজ বাঁচাতে হলে ১৭ ওভারে ২০৩ করতে হবে আইরিশদের।
বৃষ্টি থেমেছে। রোদও উঠেছে। সরানো হয়েছে কাভার। আবার মাঠ পর্যবেক্ষণে আম্পায়াররা। গা-গরমে নেমেছেন আইরিশ ক্রিকেটাররাও। এর আগে ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ১৯ ওভারে, এবার সেটি নেমে এলো ১৭ ওভারে।
বুধবার (২৯ মার্চ) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে জিতে এগিয়ে রয়েছে স্বাগতিকরা। আজ জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাবে সাকিব আল হাসানদের। এরপরই ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। মাঝে একবার বৃষ্টি বন্ধ হলে ১৯ ওভারের ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মাঠ প্রস্তুত করার সময় ফের নামে বৃষ্টি।
পরে দ্বিতীয়বার ঘোষণা করা হয় ১৭ ওভার করে হবে ম্যাচে। সেইমতোই ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তিন ওভার কম, শুরু থেকেই আইরিশদের বোলারদের ওপর চড়াও হয় স্বাগতিকরা।
৬ ওভারের পরিবর্তে পাওয়ারপ্লে এখন হবে ৫ ওভারের। দুজন বোলার করতে পারবেন সর্বোচ্চ ৪ ওভার করে। বাকিরা করতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩ ওভার করে।
আবার আক্রমণাত্মক শুরু লিটন-রনির। ৩.৩ ওভারেই ৫০ পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তুলেছিল ৮১ রান। এবার পাওয়ারপ্লে ৫ ওভারের, তবে বাংলাদেশ তুলেছে ৭৩ রান।
বেন হোয়াইটের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন লিটন। মাইলফলকে যেতে তাঁর লাগল ১৮ বল। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটিই এখন বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি। লিটন ভাঙলেন মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৬ বছরের পুরোনো ২০ বলে ফিফটির রেকর্ড, ২০০৭ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সে রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি।
থামলেন রনি। ২৩ বলে ৪৪ রান করে ফিরেন তিনি। টানা দ্বিতীয় ফিফটি না পেলেও রনি খেললেন আরেকটি ঝোড়ো ইনিংস। বেন হোয়াইটকে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েছেন, লিটনের সঙ্গে তাঁর ওপেনিং জুটিতে এর আগে উঠেছে ১২৪ রান।
ফিরে যান লিটনও। ছেড়ে দিলে নিশ্চিতভাবেই হতো ওয়াইড। লিটন তাড়া করতে গেলেন সেটিই। বেন হোয়াইটের সে বলেই আউটসাইড-এজড হয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হলো লিটনকে। ৪১ বলে ৮৩ রানেই থামলেন লিটন, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি দেখা হলো না তাই। ১৩৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
রনি তালুকদারের পর লিটন দাস ফিরলেও রানের গতি সেভাবে কমেনি বাংলাদেশের। সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়, ঝোড়ো ব্যাটিং করেছেন দুজনই। তাঁদের জুটিতে ৫১ রান উঠেছে মাত্র ২৪ বলে।
তৌহিদ হৃদয় মার্ক আদাইরের বলে রস আদাইরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৩ বলে ২৪ রান করে। ২৪ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন সাকিব।
মানবকণ্ঠ/এফআই


